গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এক এসএসসি চাকরিপ্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
অযোগ্যদের চাকরি বাতিল এবং যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে ১১৩৫ দিন ধরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। দ্রুত বিচার এবং নিয়োগ চাইছেন তাঁরা।
হাই কোর্ট এক জনেরই চাকরি বাতিল করেনি। সোমবার উচ্চ আদালত জানিয়েছে, সোমা দাস নামের এক চাকরিপ্রাপকের চাকরি বহাল থাকবে। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। মানবিক কারণে তাঁর চাকরি বহাল রেখেছে আদালত। হাই কোর্টের রায় শুনেই ধর্নামঞ্চে থাকা চাকরিপ্রাপক রাসমণি পাত্র কেঁদে ফেলেন। বলেন, “সোমা দাসের প্রতি হাই কোর্ট যেমন মানবিক হয়েছে, আমাদের প্রতিও তেমন মানবিক দৃষ্টি দেখাক।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমরা পরীক্ষা দিয়েছিলাম, আমাদের ওএমআর (উত্তরপত্র) সঠিক। আমরা র্যাঙ্কেও এসেছিলাম। তা হলে চাকরিটা কেন আমাদের দেওয়া হল না?”
প্রসঙ্গত, এই রাসমণিই মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থানের ১০০০তম দিনে প্রতিবাদস্বরূপ নিজের মাথার চুল কামিয়ে ফেলেছিলেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এসএসসি মামলার রায় পড়া শুরু করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদি। ২৮১ পৃষ্ঠার রায় পড়া হয়। এসএসসি মামলায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করার কথা ঘোষণা করে আদালত। বিচারপতি বসাক জানান, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষের পরে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বেতনও ফেরত দিতে হবে।
এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনেক ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র এসএসসির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। যেগুলি এখনও আপলোড করা হয়নি, সেগুলি দ্রুত আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উত্তরপত্র যাতে জনগণ যাতে দেখতে পান, সেই ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে উচ্চ আদালত জানিয়েছে, এসএসসি মামলায় তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির জন্য সিবিআই মনে করলে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
এসএসসি মামলায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করল কলকাতা হাই কোর্টের দুই বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা। দীর্ঘ দিন ধরেই চাকরির দাবিতে কলকাতার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অযোগ্যদের চাকরি বাতিল হল, কিন্তু যোগ্য চাকরিপ্রাপকদের কী হবে? তাই আদালতের পরবর্তী নির্দেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।