school

School: পঠনপাঠনের ঘাটতি মেটাতে রাজ্যে অফলাইনে একশো দিনের ‘ব্রিজ কোর্স'

রাজ্যের শিক্ষা দফতর আগেই জানিয়েছিল, অফলাইন ক্লাস শুরু হলে সব শ্রেণিতেই পুরনো পড়া ঝালিয়ে নিতে একটি ব্রিজ কোর্স পড়ানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৩৬
Share:

নতুন ক্লাসের পাঠ্যক্রম শেষ করা যাবে তো? ফাইল চিত্র।

প্রাণহানি-সহ সমাজজীবনে নানা ভাবে ক্ষত সৃষ্টির পাশাপাশি পড়াশোনার সঙ্গে অনেকাংশে দীর্ঘ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অপরিমেয় ক্ষতি করে দিয়েছে করোনা। পঠনপাঠনের সেই ঘাটতি পূরণের তাগিদে নয়া শিক্ষাবর্ষে অফলাইনে একশো দিনের ‘ব্রিজ কোর্স’ বা ‘সেতু পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, দেড় বৎসরাধিক কাল স্কুল বন্ধ থাকায় নিয়মিত পড়াশোনার ছিঁড়ে যাওয়া সূত্র ধরিয়ে দেওয়া। সেই সঙ্গে ষষ্ঠ, অষ্টম ও একাদশ শ্রেণিতে পাঠ্য হিসেবে করোনাও জায়গা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে পাঠ্যক্রম কমিটি।

Advertisement

রাজ্যের শিক্ষা দফতর আগেই জানিয়েছিল, অফলাইন ক্লাস শুরু হলে সব শ্রেণিতেই পুরনো পড়া ঝালিয়ে নিতে একটি ব্রিজ কোর্স পড়ানো হবে। রাজ্য সরকারের পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার মঙ্গলবার বলেন, “এই ব্রিজ কোর্সে ১০০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। নাম দেওয়া হয়েছে ১০০ দিনের সেতু পাঠ্যক্রম। তা পড়ানোর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” ২ জানুয়ারি ‘বুক ডে’ বা বই দিবস। সে-দিন ছাত্রছাত্রীদের নতুন শ্রেণির বই দেওয়া হয়। অভীকবাবু জানান, ওই দিনেই প্রতিটি বিষয়ের সেতু-পাঠ সংবলিত আলাদা বই দেওয়া হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ মনে করছেন, সেতু পাঠ্যক্রমে সব থেকে বেশি উপকৃত হবে গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়ারা, যারা অনলাইন ক্লাসের সুযোগ কার্যত পায়নি।

করোনার দাপটে দেড় বছরেরও বেশি স্কুল বন্ধ ছিল। ১৬ নভেম্বর নবম থেকে দশমের আংশিক ক্লাস চালু হলেও প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি এখনও ঘরবন্দি। প্রাক্‌-করোনাকালে যে-পড়ুয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছিল, এখন সে উঠে গিয়েছে অষ্টমে। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি না-জানলে পরবর্তী ক্লাসে তাদের অসুবিধা হতে পারে। তাই সেই সব পাঠ্যাংশ নিয়েই তৈরি হচ্ছে সেতু পাঠ্যক্রমের বই। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “কোন কোন বিষয় ছাত্রছাত্রীদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকেরা তার হদিস পেয়ে গিয়েছেন। ব্রিজ কোর্সের বইয়ে সেই সব পাঠ্যাংশই রাখা হচ্ছে। একশো দিনের মধ্যে এই সব বই পড়ানো শেষ করে তার পরেই নতুন ক্লাসের বই পড়ানো শুরু হবে।”

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, অত সময় পাওয়া যাবে কি? একশো দিন অর্থাৎ তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সেতু পাঠ্যক্রম পড়ানোর পরে নতুন ক্লাসের পাঠ্যক্রম শেষ করা যাবে তো? পাঠ্যক্রম কমিটির এক আধিকারিকের বক্তব্য, করোনার দরুন পাঠ্যক্রমও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কিছুটা কমানো হয়েছে। তাই পাঠ্যক্রম শেষ করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, অফলাইনে সব শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়ে গেলে অর্থাৎ স্কুল পুরোপুরি খুলে গেলেই সেতু পাঠ্যক্রম চালু হবে। এখন নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস চললেও প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন চলছে অনলাইনেই। নতুন করে করোনা পরিস্থিতির অবনতি না-হলে জানুয়ারিতে প্রথম থেকে অষ্টম পর্যন্ত অফলাইন ক্লাস চালু করার সম্ভাবনার কথা শিক্ষা দফতরের সূত্রে জানা গেলেও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এক শিক্ষাকর্তা বলেন, “অফলাইন ক্লাস যখনই শুরু হোক না কেন, তার সঙ্গে সঙ্গে এই সেতু পাঠ্যক্রম শুরু হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement