রাজ্যপালের মন্তব্যের জবাব দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলে তিনি চুপ করে থাকবেন না। সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই প্রসঙ্গে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’ নাটকের বিখ্যাত সংলাপ তুলে ধরে তুলনাও টেনেছিলেন তিনি। এ বার সেই শেক্সপিয়ারেরই নাটকের দুই ট্র্যাজিক চরিত্রকে তুলে ধরে আনন্দকে জবাব দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপালকে ‘ম্যাকবেথ’ বা ‘জুলিয়াস সিজার’-এর মতো লাগছে বলে কটাক্ষ করেছেন নাট্যকার তথা রাজনীতিক ব্রাত্য।
সোমবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল, সেখানে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে আইনগত বা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলে এক জন রাজ্যপাল শেক্সপিয়রের হ্যামলেটের মতো ‘টু বি অর নট টু বি’-র সংশয় নিয়ে বসে থাকবেন না। কারণ, শিক্ষা আমাদের এটাই শেখায়।” সোমবার এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, ঠিক তার পর দিন ব্রাত্য বলেন, ‘‘হ্যামলেট নয়, রাজ্যপালকে বরং ম্যাকবেথ বা জুলিয়াস সিজারের মতো লাগছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপালের সংঘাতের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে ব্রাত্যের বক্তব্যে। তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষমতা গ্রাস করার এক মানসিকতা দেখা যাচ্ছে ওঁর মধ্যে। আমরা কিন্তু বারে বারে চাইছি আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে কাজ করতে। উনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করছেন। অনেকের ১০ বছরের অভিজ্ঞতা নেই। তাঁদেরও উপাচার্য নিয়োগ করছেন। উনি নিজেই নিয়মের কথা বলেন। কিন্তু নিজেই নিয়ম ভাঙছেন।’’
অথচ ধনখড়-পর্বের পর সিভি আনন্দ বোস এ রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে আসা ইস্তক নবান্ন এবং রাজভবন এই দুইয়ের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলেছিল বহু ক্ষেত্রে। তার প্রাথমিক ধাপে দেখা গিয়েছিল, সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা হরফে লেখা শুরু করেছিলেন রাজ্যপাল। যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের জেরে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। যার স্পষ্ট ইঙ্গিত মঙ্গলবার পাওয়া গিয়েছে ব্রাত্যের বক্তব্যেও।