—প্রতীকী ছবি।
বুথ স্তরের সংগঠনে বড়সড় ফাঁক রয়েছে। তা পূরণ না-করতে পারলে কোনও কিছুতেই কিছু হবে না। বুথ স্তরে সাংগঠনিক গাফিলতির কথাই বড় জায়গা করে নিল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের খসড়া প্রতিবেদনে।
শুক্রবার থেকে সিপিএমের হাওড়া জেলা দফতর অনিল বিশ্বাস ভবনে শুরু হচ্ছে রাজ্য কমিটির তিন দিনের বর্ধিত অধিবেশন। তার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৩১ পাতার খসড়া প্রতিবেদন, যা পেশ করবেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সূত্রের খবর, সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “জনগণকে শামিল করে বুথে বুথে শক্তিশালী সংগঠন করার সিদ্ধান্ত বহু বার গ্রহণ করা হলেও এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আমরা অর্জন করতে পারছি না।” ওই সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২৩ নম্বর পাতায় ‘বুথে বুথে সংগঠন’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, “বুথ এলাকায় সমর্থক থাকলেও তাঁদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সাফল্য আসছে না। তার কারণ, রাজনৈতিক উপলব্ধি ও সাহসী পার্টি সদস্যদের অভাব।” প্রতিবেদনে এ-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বুথ সংগঠন শুধু ভোটের দিকে তাকিয়ে গড়ে তুললে হবে না। তা সারা বছর নিরন্তর চালিয়ে যেতে হবে।
ওই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, দলীয় সদস্যদের একাংশ ‘ফাঁকিবাজি’ করছেন। তাঁরা ঠিক মতো গণসংগঠনের কাজ করছেন না। শাখা কমিটির স্তরেও যে দুর্বলতা রয়েছে, তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়েছে, শাখা স্তরের দুর্বলতা কাটাতে এরিয়া এবং জেলা কমিটির যে নজরদারি রাখা উচিত ছিল, তা সমান ভাবে সব জায়গায় হচ্ছে না। ‘চেক আপ’-এর ক্ষেত্রে উচ্চতর কমিটির ভূমিকায় বিস্তর ত্রুটি রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই ৩১ পাতার প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে সিপিএমের কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি ঘটেছে। যা জেনে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য ঘরোয়া আলোচনায় ঠাট্টা করে বলেন, “পার্টিটা ফেসবুকেই আছে। বুথে ফেস (মুখ) নেই।”
আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় উল্লিখিত হয়েছে ওই রিপোর্টে। সেখানে লেখা হয়েছে, দলের কর্মসূচিতে তরুণদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়লেও পার্টিতে তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে নজর কাড়ার মতো কোনও বিষয় নেই। গত ১৭ অক্টোবর ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সিপিএম আয়োজিত সভায় সেলিম গোটা দলকে বার্তা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “তরুণ প্রজন্মের কর্মীদের বাচ্চা ছেলে বলে হেলাফেলা করবেন না।” আনন্দবাজার অনলাইনে লেখা হয়েছিল, সিপিএম-এর মধ্যে অল্পবয়সিদের পার্টিতে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে পছন্দ-অপছন্দের বিষয় রয়েছে। জানা গেল, রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের প্রতিবেদনেও সেই 'পছন্দ-অপছন্দ'-এর উল্লেখ রয়েছে।