সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ সেলিম। — ছবি সিপিএমের ফেসবুক।
রবিবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন শেষ হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই লোকসভা ভোটে বাংলায় আসন সমঝোতার বিষয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়ে দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠক করে সেলিম বলেন, ‘‘তিন দিনের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে আমরা লোকসভা ভোটের কৌশল চূড়ান্ত করব। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যাবে।’’
সাংবাদিক বৈঠকের পরে ঘরোয়া আলোচনায় সেলিম জানান, রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন শেষের পর প্রথমে বামফ্রন্টের মধ্যে আলোচনা হবে। তার পর অন্য দলগুলির সঙ্গে কথা বলা হবে। অন্য দল কারা? তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক। তবে অনেকের মতে, এ ক্ষেত্রে সেলিম কংগ্রেস ও আইএসএফের কথাই বলতে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধাসনভা ভোটের সময়ে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ আইএসএফকে নিয়ে সিপিএমের মাখামাখি নিয়ে দলের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। তথাকথিত ‘সংযুক্ত মোর্চা’র ব্রিগে়ডে অধীর চৌধুরীর বক্তৃতা থামিয়ে দিয়ে আব্বাস সিদ্দিকিকে মঞ্চে তোলা নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল বাম মহলে। আইএসএফকে নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল কংগ্রেসও। সিপিএমের এক নেতার কথায়, সে সব বিষয় মাথায় রেখেই এ বার আসন সমঝোতা সংক্রান্ত সম্ভাব্য সব দিকের কথা রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে আলোচনা করে নেওয়া হবে।
অধিবেশনে থাকবেন সমস্ত জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরা। তা ছাড়া গণসংগঠনগুলির বাছাই করা নেতৃত্বও থাকবেন সেখানে। সিপিএমের হাওড়া জেলা পার্টি অফিসে শুক্রবার এই বর্ধিত অধিবেশনের সূচনা করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। উল্লেখ্য, বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠন ও তার পরের একাধিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ফ্রেমে ইয়েচুরির ছবি নিয়ে সিপিএমের নিচুতলায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। তার পর থেকে ইয়েচুরি কাকতালীয় ভাবেই আর বাংলায় আসেননি। পাঁচ মাসের বেশি সময় পরে বাংলায় আসছেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক।
সিপিএম সূত্রে খবর, দল এ বার লোকসভা ভোটে বাছাই করা কিছু আসনে জোর দিয়ে লড়তে চায়। আলিমুদ্দিনের নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় স্পষ্টই বলছেন, ছড়িয়ে লড়াই করে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার চেয়ে কিছু আসনে ‘ফোকাস’ করে লড়া ভাল। যেমন সিপিএম মনেপ্রাণে চাইছে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া করে মুর্শিদাবাদ, মালদহ উত্তরের মতো আসনে লড়তে। তার জন্য তারা অনেক আসন ছাড়তেও রাজি। এ সবই তিন দিন ধরে চর্চা করবেন সিপিএম নেতারা। কিন্তু ভোটে কী হবে? সেই উদ্বেগ গোপন করছেন না অনেকেই।