(বাঁ দিক থেকে ডান দিক) ফিরহাদ হাকিম, সুকান্ত মজুমদার এবং মদন মিত্র। —ফাইল চিত্র।
চাইলে সিবিআই তল্লাশি এক ফোনে বন্ধ করে দিতে পারেন তিনি। সোমবার এমন দাবিই করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি, রাজ্যের মন্ত্রী তথা ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশির প্রেক্ষিতে তাঁকে কটাক্ষও করেন তিনি। সুকান্তের এই সিবিআই হানা বন্ধ করতে পারার দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মহল তোলপাড়। রবিবার ফিরহাদ, মদন মিত্র এবং একাধিক পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানদের বাড়িতে সিবিআই হানার নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। সোমবার রাজ্য বিজেপির সভাপতির এই মন্তব্যের পর তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সুকান্তের কথাতেই পরিষ্কার যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি তাঁদের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে।
সোমবার সিবিআই তল্লাশি হয় রানাঘাটের বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। তার প্রেক্ষিতে সুকান্তের মন্তব্য, ‘‘যাঁকে প্রয়োজন তাঁকে ডাকবে (সিবিআই), প্রয়োজন না হলে কেন শুভেন্দুকে ডাকবে?’’ তাঁর সংযোজন, “তল্লাশি বন্ধ করতে আমরাও ফোন করতে পারতাম। কিন্তু আমরা এতে বিশ্বাসী নই।’’
উল্লেখ্য, এর আগে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে তৃণমূলের ধর্না প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেছিলেন, ‘‘ওঁকে কিছু করতে হবে না। সুকান্ত মজুমদার একটা ফোন করবে, সব টাকা চলে আসবে।’’ তার পর সুকান্তের ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয় তৃণমূলের তরফে।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় নিহত বিজেপি কর্মী কানন রায়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সেখানে পথসভা করেন সুকান্ত। ফিরহাদকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনি চোর নন, ডাকাত।’’ বস্তুত, সোমবার সিবিআইয়ের তল্লাশির পর সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরহাদ প্রশ্ন তোলেন, তিনি কি চোর? অভিযোগ করেন, বিরোধী রাজনীতি করেন বলে বার বার তাঁকে বিজেপি হেনস্থা করছে। অন্য দিকে, নিহত বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে অভিযুক্তদের না-ধরতে পারলে গাইঘাটা থানায় তালা মেরে দেওয়ার ‘নিদান’ দেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘একটা পুলিশকেও থানা থেকে বেরোতে দেবেন না। তার পরে যা হবে, দেখে নেব।’’
ওই বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনায় তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি নিরুপম রায়ের গ্রেফতারির দাবি তুলেছে বিজেপি। সুকান্ত শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। আর্থিক সাহায্য হাতে তুলে দেন এবং জানান প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হবে। পাশাপাশি, সিএএ নিয়েও আবার মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে সুকান্তকে। নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়ি থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি চলে গিয়েছিলেন ঠাকুরনগরে। গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরের কার্যালয়ে যান। তার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঠাকুরনগরে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। বাংলার মানুষকে আমি আশ্বস্ত করতে চাই। বিশেষ করে মতুয়া নমঃশূদ্র–সহ সব উদ্বাস্তু মানুষকে। সেটি হল— ২০২৪ সালের আগে সিএএ হবেই।’’