Suvendu Adhikari & CPM

বামেদের দৌলতেই তৃণমূল জয়ী! বিজেপির বিপর্যয় নিয়ে ১২ আসনের অঙ্ক বিশ্লেষণ শুভেন্দুর মুখে

বৃহস্পতিবার রেড রোডে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন কর্মসূচিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিরোধী দলনেতা। সেখানেই লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ১৫:০৫
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে বিজেপি। আর সেই বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি সিপিএমকে দায়ী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার রেড রোডে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন কর্মসূচিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শুভেন্দু। সেখানেই এক প্রশ্নের উত্তরে সিপিএম নেতৃত্বের প্রতি খড়্গহস্ত হন তিনি। সরাসরি না বললেও, সিপিএম এ বারের ভোটে শাসকদল তৃণমূলকে সাহায্য করেছে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শুভেন্দু বলেন, ‘‘সিপিএমের যে এজেন্ডা ছিল, সেই এজেন্ডা অনুযায়ী তারা সফল হয়েছে। তারা হিন্দু ভোট কাটার জন্য দাঁড়িয়েছিল। ওখানে সুজন, এখানে সায়ন, সব্যসাচীরা সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছিল।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘এটা পিন্ডি জোটের কৌশল। পশ্চিমবঙ্গকে যারা ৩৪ বছর ধরে চেটে চেটে খেয়েছে, ৫৪ হাজার লোককে খুন করেছে, যারা সাঁইবাড়ি, নানুর, নন্দীগ্রাম, সূচপুর, আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের পুড়িয়েছে, সব কলকারখানাতে তালা লাগিয়েছে, তাদের এজেন্ডায় তারা সফল হয়েছে। কিন্তু সময় কথা বলবে।’’

বিরোধী দলনেতার দাবি, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কমপক্ষে ১২টি আসনে বামপ্রার্থীরা ভোট কেটে শাসকদল তৃণমূলকে জিততে সাহায্য করেছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও একই কায়দায় ৫০টির বেশি আসনে বিজেপিকে হারিয়ে তৃণমূলের জয়ের পথ মসৃণ করেছিল সিপিএম তথা বাম দলগুলিই।

Advertisement

মূলত যে সব আসনগুলির কথা বিরোধী দলনেতা উল্লেখ করেছেন, সেগুলি হল, যাদবপুর, হাওড়া, দমদম, তমলুক। যদিও তমলুক লোকসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৬০ হাজারের বেশি ভোটে জয় লাভ করলেও, বাকি আসনগুলিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। যাদবপুর লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ২০১ ভোটে। আর এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য পেয়েছেন ২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭১২ ভোট। আবার দমদম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্তকে হারিয়েছেন ৭০ হাজার ৬৬০ ভোটে। এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী পেয়েছেন ২ লক্ষ ৪০ হাজার ৭৮৪ ভোট। আবার হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীকে হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭৪২ ভোটে। সেখানে সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৫ ভোট।

আবার বসিরহাট লোকসভা আসন দীর্ঘ সময় ধরে বামফ্রন্ট শরিক সিপিআইয়ের হাতে থাকলেও, এ বারের লোকসভা ভোটে আচমকাই সেই আসন সিপিআইয়ের হাত থেকে নিয়ে প্রার্থী দেয় সিপিএম। সেখানে তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রকে হারিয়েছেন ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫৪৭ ভোটে। এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী নিরাপদ সর্দার পেয়েছে মাত্র ৭৭ হাজার ৮৯৯ ভোট। একই ভাবে বরাহনগরে বিধানসভা ভোটে এত দিন প্রার্থী দিল বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি। আর এ বারের উপনির্বাচনে সেই কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী হন সিপিএমের তন্ময় ভট্টাচার্য। তিনি পেয়েছেন ২৬ হাজার ৭৩৫ ভোট। আর তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি প্রার্থী সজল ঘোষকে হারিয়েছেন ৮ হাজার ১৪৮ ভোটে। এমনই ভোটের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বিরোধী দলনেতা এমন মন্তব্য করেছেন বলেই দাবি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের। তবে সিপিএম নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন এমন কথা বলছেন বিরোধী দলনেতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement