ছবি: পিটিআই ।
নিটে বসার আগে যে প্রশ্নপত্র তিনি হাতে পেয়েছিলেন, তার সঙ্গে হুবহু মিল ছিল আসল প্রশ্নপত্রের। তেমনটাই জানিয়েছেন ডাক্তারিতে ভর্তির জন্য সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে ধৃত এক পরীক্ষার্থী। ওই পরীক্ষার্থীর নাম অনুরাগ যাদব। অনুরাগের স্বাক্ষর করা স্বীকারোক্তির একটি চিঠি ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র হাতে এসেছে। সেই নথিতেই নাকি অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন অনুরাগ। যদিও এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২২ বছর বয়সি অনুরাগ নিটকাণ্ডে ধৃত, বিহারের দানাপুর নগর পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার সিকন্দর প্রসাদ যাদবেন্দুর ভাগ্নে। সিকন্দরকে নিটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে। অনুরাগের দাবি, সিকন্দরই তাঁকে বলেছিলেন যে, পরীক্ষার সমস্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এর পর তাঁর হাতে একটা প্রশ্নপত্রও তুলে দেওয়া হয়। প্রশ্নের সঙ্গে দেওয়া হয় উত্তরপত্রও। এর পর নিট দিতে গিয়ে অনুরাগ দেখেন, তাঁর হাতে পরীক্ষার আগে যে প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল এবং পরীক্ষার দিন যে প্রশ্ন এসেছে, তা হুবহু এক।
অন্য দিকে, নিট-এর প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘মূলচক্রী’ অমিত আনন্দও। ‘এবিপি নিউজ়’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অমিত জানিয়েছেন, ৩০-৩২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের প্রশ্নপত্র বিক্রি করা হয়েছিল! অমিত জানিয়েছেন, পরীক্ষার আগের দিন তাঁর হাতে প্রশ্নপত্র আসে। তাই টাকা দেওয়া পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই নিট-এর প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে অমিত-সহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন সিকন্দরও। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েক জন নিট পরীক্ষার্থী সাহায্য করার আর্জি নিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। তার পর দরাদরি করে প্রশ্নপত্র বিক্রির দাম স্থির হয়। সিকন্দর যোগাযোগ করেন অমিতের সঙ্গে। পরীক্ষার আগের দিন ওই পরীক্ষার্থীদের পটনার রামকৃষ্ণনগর এলাকার একটি ‘নিরাপদ’ জায়গায় রাখা হয়। তার পরই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করে বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (ইএইউ)।
উল্লেখ্য, ‘ইন্ডিয়া টুডে’র হাতে সিকন্দরের স্বীকারোক্তি দেওয়া একটি চিঠি এবং আরও বেশ কয়েকটি নথি হাতে এসেছে। যদিও সেই সব নথির সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আনন্দবাজার অইলাইন। সেই নথিতে ‘মন্ত্রীজি’ নামে এক জনের উল্লেখ রয়েছে। এই ‘মন্ত্রীজি’ আদতে কে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও সূত্রে খবর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক নিট পরীক্ষায় অনিয়ম নিয়ে বুধবার ইএইউ-এর কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। বিহারে এর আগেও বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস-সহ অন্যান্য বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি হাই কোর্টের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও হলফনামা দায়ের করা হয়েছে।