মাদক পাচার কাণ্ডে ধৃত বিজেপি যুবমোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামী
বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ তাঁকে ‘অন্য চোখে’ দেখতে শুরু করেছিলেন। তাঁকে শারীরিক হেনস্থাও করতেন রাকেশ। রাকেশই তাঁর গাড়িতে মাদক রাখার ব্যবস্থা করে তাঁকে পুলিশের জালে ফাঁসিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে পুলিশের গাড়িতে বসে চিৎকার করে এমনই বিস্ফোরক সব অভিযোগ করলেন মাদক পাচারে ধৃত বিজেপি যুবমোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামী। ধৃত পামেলাকে আবার পুলিশি হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল পুলিশ। আদালত পামেলা এবং তাঁর সঙ্গেই ধৃত আরও দু’জনকে আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সরকারি আইনজীবী জানান, ওই মাদক কারবারের তদন্তের স্বার্থে তাঁরা পামেলা এবং ধৃত রাকেশকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চান। তাই পামেলাকে যেন আবার পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। পক্ষান্তরে, পামেলার আইনজীবী আদালতে জানান, পুলিশ পামেলাকে দিয়ে তারা যা চাইছে, সে সব বলিয়ে নিচ্ছে!
প্রসঙ্গত, পামেলা আগেরদিন আদালত চত্বরে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তে জড়িত বলে রাকেশের সঙ্গেই নাম করেছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। বৃহস্পতিবার তাঁর যত অভিযোগ, সে সবই ছিল রাকেশের বিরুদ্ধে। আদালত থেকে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওযার সময় পুলিশের গাডি়তে বসেই পামেলা চিৎকার করে সেখানে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে বলতে থাকেন, ‘‘আমার কৈলাস’জির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। আমার বিজেপি-র আর কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। ওই রাকেশ আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্র করেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমি ওই চক্রান্তের কথা বুঝতে পেরেছিলাম। কারণ, রাকেশ আমাকে দিনের পর দিন শারীরিক হেনস্থা করেছে। আমি প্রতিবাদ করছিলাম বলে আমায় ফাঁসাতে ও-ই আমার গাড়িতে মাদক রাখার চক্রান্ত করেছে!’’
পামেলার আরও বক্তব্য, ‘‘পুলিশ একেবারে সঠিক তদন্ত করছে। আমার কাছে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আছে। আমার ফোনে সমস্ত রেকর্ড করা আছে। রাকেশ আমায় অন্য চোখে দেখা শুরু করেছিল। কিন্তু আমি রাজি না-হওয়ায় ও আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। রাকেশের লোকই আমার গাড়িতে মাদক রেখেছিল।’’ এর পরেই পামেলা চিৎকার করতে শুরু করেন, ‘‘সত্যের জয় হোক। সত্যমেব জয়তে। ভারত মাতা কি জয়!’’
প্রসঙ্গত, পামেলা রাকেশের নাম বলার পরেই ওই বিজেপি নেতাকে লালবাজারে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। তিনি হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানেও তিনি ছিলেন না। শেষপর্যন্ত তাঁকে বর্ধমানের গলসি থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় আনে পুলিশ। আপাতত রাকেশ পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। তাঁকে এবং পামেলাকে এর পর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। পামেলার দাবি, তাঁর কাছে রাকেশের ‘চক্রান্ত’-এর সমস্ত তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।