ডিজিটাল মাধ্যমের উপর কেন্দ্রের নজরদারি
সূত্র মারফত আগে থেকেই আঁচ করা গিয়েছিল। এ বার সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল। ডিজিটাল মাধ্যমের উপর নজরদারি চালাবে কেন্দ্র। স্পষ্ট জানান হল, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি আঘাত হানলে কড়া শাস্তি হবে সেই নির্দিষ্ট ডিজিটাল মাধ্যমের। স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্ববোধ থাকাটা জরুরি বলে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। ৩ মাস পরে সমস্ত নিয়মবিধি প্রণয়ন করবে সরকার। মাঝের সময়ে বোঝপ়়ড়া করে নিতে হবে মাধ্যমের নির্মাতাদের।
বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ নিয়মাবলী (কোড অব এথিক্স) পেশ করলেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির হাতে থাকবে নজরদারির বিভিন্ন দায়িত্ব। নেটমাধ্যমের নিয়মাবলী জানালেন মন্ত্রী।
ফরওয়ার্ড করা মেসেজ প্রথম কে পাঠিয়েছে, তা চিহ্নিত করা হবে। ভারতের বাইরে থেকে আসা কোনও বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে দেখা হবে ভারতে কে সেটা প্রথম ছড়ানো শুরু করেছে। কারও নেটমাধ্যম প্রোফাইলে বেআইনি তথ্য থাকলে, সেই তথ্য প্রকাশের কারণ দেখাতে হবে।
রবি শঙ্কর প্রসাদ জানালেন, ‘‘ভারতবর্ষে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমের পথে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। তাদের কাজ প্রশংসনীয়। স্পষ্ট বলে দেওয়া ভাল, সরকার কিন্তু সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। নেটমাধ্যমের সাহায্যে মানুষ প্রশ্ন তুলতে পারেন। সেটার প্রয়োজন রয়েছে। নেটমাধ্যমের অপব্যবহার হলে নেটাগরিকরাই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেন। কিন্তু যে ভাবে মহিলাদের আপত্তিকর ছবি কেটে ছেটে নেটমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে, তা অন্যায়। একে সভ্যতা বলা চলে না। অর্থনৈতিক প্রতারণা ও ভুয়ো খবরে ভরে যাচ্ছে দেশ।’’ মন্ত্রীর দাবি, নেটমাধ্যমের সাহায্যে দেশের সীমানার বাইরে থেকেও মানুষ সন্ত্রাসবাদ ও হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে। এমন অভিযোগও তাঁদের কাছে জমা পড়েছে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের উপর কী কী নিয়ম প্রয়োগ হবে তা ঘোষণা করলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। প্রথমত, কোনও বিষয়বস্তু পেশ করতে হলে তার সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, অভিযোগ এলে তার নিষ্পত্তি করার পদ্ধতি থাকতে হবে। তৃতীয়ত, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমকে একটি কমিটি তৈরি করতে হবে। যারা নজরদারি করবে বিষয়বস্তুর উপর। নেতৃত্বে থাকবেন কোনও উচ্চ আদালত ও শীর্ষ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। বিষয়বস্তু নিয়ে অভিযোগ জমা পড়লে তার জন্য আদালতে শুনানি হবে।
যে কেউ কমিটির কাছে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করতে পারবে। অভিযোগ করা হলে সেই সংস্থাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলা যেতে পারে বা তিরস্কার করা যেতে পারে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করার ক্ষমতা দেওয়া হবে সেই কমিটিকে।