Saif Ali Khan Attack Case

‘পুলিশ জীবনটাই ধ্বংস করে দিল’! সইফ-কাণ্ডে ভুল শনাক্তকরণের মাসুল কী ভাবে গুণছেন আকাশ?

“কাজ হারিয়েছি, বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে! এক জন মানুষের সঙ্গে এর থেকে বেশি আর কী হতে পারে?” পুলিশের ভুল নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সইফ-কাণ্ডে ধৃত এক সন্দেহভাজন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৬
Share:

আকাশ কানোজিয়া সইফ আলি খানের আক্রমণকারী নন। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলা প্রবাদ বলে, ‘উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’। এতে বুধোর কী অসুবিধা হয়, তা কেউ জানেন না। কিন্তু পুলিশের ছোঁয়া-লাগা মানুষের যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বেশ অসুবিধা হয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বছর একত্রিশের আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া।

Advertisement

গত ১৬ জানুয়ারি, মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে রক্তাক্ত অবস্থায় ভর্তি করানো হয় বলিউড তারকা সইফ আলি খানকে। দাবি করা হয়, ওই দিন ভোরে বান্দ্রা এলাকার অভিজাত আবাসনে নিজের ঘরের ভিতরেই ছুরিকাহত হন তিনি। কোনও অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে এই হামলা চালিয়েছে। তারকার আবাসনের আপৎকালীন দরজার দিকে সিঁড়িতে লাগানো নজরদারি ক্যামেরা থেকে পাওয়া যায় এক সন্দেহভাজনের ছবি। মুম্বই পুলিশ তার ভিত্তিতেই শুরু করে চিরুনি তল্লাশি। সে সূত্রে গত ১৭ জানুয়ারি মধ্যপ্রদেশের বিলাসপুর রুটে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের কামরা থেকে আকাশকে আটক করে রেল পুলিশ। তার পরই সব কিছু ওলট পালট হয়ে গিয়েছে তাঁর জীবনে, দাবি করেছেন আকাশ।

তিনি জানিয়েছেন, মুম্বইয়ে একটি ভ্রমণ সংস্থার হয়ে গাড়ি চালানোর কাজ করতেন তিনি। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলেন, এ বার বিয়ে করবেন। স্থির হয়ে গিয়েছিল সম্বন্ধ। এমনকি গত ১৭ জানুয়ারি ট্রেনে চড়ে তিনি যাচ্ছিলেন হবু শ্বশুরবাড়িই। কিন্তু সে সব কিছু ভেস্তে গিয়েছে।

Advertisement

আকাশ বলেছেন, “পুলিশ আমাকে শুধু আটকই করেনি। আমার ছবি দিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতিও দিয়েছিল। তার ফলে আমার চাকরি গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে বিয়ের সম্বন্ধও।”

আকাশের দাবি, পুলিশ তাঁকে আটক করার পর কোনও তথ্য যাচাই না করেই সংবাদমাধ্যমের কাছে বিস্তারিত তথ্য তুলে দেয়। তার ফলে মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় তাঁর ছবি। অকারণ রোষের মুখে পড়েন আকাশ। শুধু তিনি নন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের দিকেও ধেয়ে এসেছে কটাক্ষ।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের কাছে আকাশ বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজে যাঁর ছবি দেখা গিয়েছে, তাঁর তো দাড়ি গোঁফ নেই। আমার গোঁফ রয়েছে। পুলিশ সেটাই দেখতে পেল না! অথচ অভিনেতার বাড়ি থেকে তারা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল।”

আকাশ জানিয়েছেন তাঁর হেনস্থার কথা। তাঁর দাবি, সে দিন তিনি হবু স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই যাচ্ছিলেন। মাঝপথে পুলিশ আটক করে। শুরু হয় হেনস্থা। কোনও রকমে নিজের কাজের জায়গায় ফোন করেন। যোগাযোগ করেন মালিকের সঙ্গে। দীর্ঘ ক্ষণ পর ছাড়া পান পুলিশের হাত থেকে। কিন্তু তার পরই তাঁর ঠাকুরমার ফোন আসে। আকাশ জানতে পারেন, ইতিমধ্যেই তাঁর খবর ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র এবং বিয়ে ভেঙে দিয়েছে পাত্রীপক্ষ। উপরন্তু গাড়ি চালকের কাজটিও হারাতে হয়েছে তাঁকে।

এ দিকে পরের দিন ১৮ জানুয়ারি মুম্বইয়ের ঠাণে এলাকা থেকে আর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। দাবি করা হয় শরিফুল ইসলাম শেহজ়াদ নামে ওই ব্যক্তিই সইফের বাড়ি ঢুকেছিলেন চুরির উদ্দেশ্যে। বাধা পেয়ে গৃহকর্তার উপর চ়ড়াও হন ওই বাংলাদেশি নাগরিক। কিন্তু তার পর গত এক সপ্তাহে এখনও স্পষ্ট হয়নি ধৃত শরিফুলই ছুরি হামলা চালিয়েছিলেন কি না! আদৌ তিনি সইফের বাড়ি গিয়েছিলেন কি না! এমনকি প্রশ্ন উঠছে আদৌ সইফের উপর ধারালো অস্ত্রের হামলা হয়েছিল, না কি ভোঁতা কোনও অস্ত্রের!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement