মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে ফের আদালতে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করল বিজেপি পরিষদীয় দল। মঙ্গলবার তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা ও নাটাবাড়ির প্রবীণ বিধায়ক মিহির গোস্বামী। মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ করার দাবি নিয়ে তাঁরা ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। কাকে ভোট দিয়েছেন প্রশ্ন শুনেই তিনি বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছি। হ্যাঁ হ্যাঁ, তৃণমূলকেই।’’ এর পরে প্রশ্ন ছিল, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর তোলা ক্রস ভোটিংয়ে বিষয়ে। সে প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই মুকুল বলেন, ‘‘ও সব বাজে কথা, ও সব বাজে কথা।’’ কোন প্রার্থী জিতবে? একটুও সময় না নিয়ে মুকুল বলেন, ‘‘তৃণমূলই জিতবে।’’ কিন্তু খাতায়কলমে বিজেপির বিধায়ক হয়ে কি তিনি সে কথা বলতে পারেন? নির্বিকার মুকুল বলে ফেলেন, ‘‘না, না, আমি বিজেপির বিধায়ক নই।’’
মুকুলের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই বিজেপি পরিষদীয় দল তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানাতে চায়। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়ে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিতে চাই। তিনি অনুমতি দিলেই আমরা ফের আদালতে যাব।’’ বিজেপি বিধায়ক মিহির বলেন, ‘‘একজন নিজেই বলছেন যে আমি বিজেপি বিধায়ক নই। অথচ স্পিকার তাঁর পদ খারিজ করছেন না। দু’বার আদালতে গিয়েছি। আদালত স্পিকারকে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সুবিচার পাইনি। তাই এ বার আমরা প্রমাণ-সহ আদালতে যাব।’’ সূত্রের খবর, সোমবার বিধানসভায় মুকুলের বক্তব্যের ভিডিয়ো জোগাড় করেছে বিজেপি পরিষদীয় দল। সেই ভিডিয়োকেই প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে ফের মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ করাতে আদালতে যেতে পারে গেরুয়া শিবির।
প্রসঙ্গত, প্রথম বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের মামলায় রায় দেন বিমান। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবেদন খারিজ করে জানান, মুকুল বিজেপিতেই আছেন। তাই তাঁর কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ খারিজ করা হচ্ছে না। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি পরিষদীয় দল। সেই মামলার শুনানিতে গত ১১ এপ্রিল দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি সংক্রান্ত মামলায় বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নির্দেশ মেনেই ফের শুনানি হয় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকারের তত্ত্বাবধানে। শুনানির পরে ৮ জুন পুনর্বিবেচিত রায় জানান বিমান। রায়দানে তিনি বলেন, ‘‘মুকুল আছেন বিজেপিতেই। তাঁর তৃণমূলে যোগদানের কোনও প্রমাণ নেই।’’