দাঁইহাট পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
শাসকদল পরিচালিত পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করলেন তৃণমূলেরই ১১ জন কাউন্সিলর। আবার এক বার প্রকাশ্যে পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভায় শাসকদলের মধ্যেকার সংঘাত।
মঙ্গলবার দাঁইহাট পুরসভার ১৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন পুরপ্রধান প্রদীপকুমার মাঝি রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। প্রথমে দাঁইহাট পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক এবং পরে কাটোয়া মহকুমা শাসকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন ওই ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলররা। দাঁইহাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এই চেয়ারম্যান কাজ করতে পারছেন না।’’ তিনি জানান, গোটা দাঁইহাটে শুধুমাত্র তিনটি ওয়ার্ডে কাজ হচ্ছে। আর কোথাও উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না। এটা মানতে পারছেন না কাউন্সিলররা। অজিত বলেন, ‘‘আমরা কাজ করতে ভোটে দাঁড়িয়েছি। সেটাই এই চেয়ারম্যানের আমলে হচ্ছে না।’’
পাল্টা দাঁইহাটের পুরপ্রধান প্রদীপের দাবি, পুরসভা জুড়েই কাজ হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহে’ অন্য কোনও ‘রহস্য’ রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ওঁদের (অনাস্থা আনা কাউন্সিলর) ওয়ার্ডেও কাজ হচ্ছে। ওঁরা অন্য কোনও অভিযোগ করলে হয়তো মেনে নিতাম। কিন্তু উন্নয়ন হচ্ছে না— এটা বললে আমি মানব না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি শুনেছি যে অনাস্থাপত্র পেশ করা হয়েছে। কিন্তু আমি সেটা এখনও হাতে পাইনি। গত ৫ তারিখে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছিলাম। সেখানে মন্ত্রী সকলকে একজোট হয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না।’’
দাঁইহাট পুরসভার অন্দরে গন্ডগোল অবশ্য নতুন নয়। গত বছর জুন মাসে পুর প্রতিনিধিদের একাংশ পুরপ্রধান প্রদীপের অপসারণের দাবি করে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দিয়েছিলেন। তখন অভিযোগ করা হয়, পুরপ্রধানের অপদার্থতার জন্য শহরের নাগরিক পরিষেবা লাটে উঠেছে। মানুষের আস্থা ফিরে পেতে হলে অবিলম্বে পুরপ্রধানকে অপসারণ করতে হবে। অন্য দিকে, গত লোকসভা ভোটে দাঁইহাট শহরে আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে আছে বিজেপি। ১৪টি ওয়ার্ডের ৯টিতেই তৃণমূল পিছিয়ে। এর নেপথ্যে তৃণমূলের অন্তর্কলহ দায়ী বলে মানছেন শাসকনেতারা।