Kolkata Metro

রাতের মেট্রোয় কর্মীদের অতিরিক্ত কাজের ভাতা বন্ধের পথে কর্তৃপক্ষ

চলতি বছরের শুরুতে আর্থিক ক্ষতির দোহাই দিয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটের মেট্রোয় যাত্রীপিছু ১০ টাকা করে ভাড়া বাড়িয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ০৯:২৭
Share:
নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন স্টেশনে বিকেল চারটে থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিশেষ শিফট চালু করার কথা বলা হয়েছে।

নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন স্টেশনে বিকেল চারটে থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিশেষ শিফট চালু করার কথা বলা হয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।

রাতের মেট্রো পরিষেবার আর্থিক ভার ক্রমেই হালকা করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। গত বছরের এপ্রিলে লোকসভা নির্বাচনের পর্ব চলাকালীন ঘটা করে ওই পরিষেবা শুরু করা হলেও পরে বিভিন্ন দফায় তাতে বেশ কিছু ‘কাটছাঁট’ করা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে আর্থিক ক্ষতির দোহাই দিয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটের মেট্রোয় যাত্রীপিছু ১০ টাকা করে ভাড়া বাড়িয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এ বার ওই পরিষেবার জন্য মেট্রোকর্মীদের প্রদেয় ওভারটাইম বা অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য নির্দিষ্ট ভাতা বন্ধ করতে চলেছেন তাঁরা।

Advertisement

ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে বিভিন্ন স্টেশনে বিকেল চারটে থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিশেষ শিফট চালু করার কথা বলা হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, উত্তরে দমদম থেকে দক্ষিণে কবি সুভাষের মধ্যে প্রতিটি স্টেশনে রাতে এক জন করে শিফট ইন-চার্জের মাধ্যমে যাবতীয় দায়িত্ব সামলাতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মীকে স্টেশনের কাজ সামলানোর পাশাপাশি প্রয়োজনে প্যানেল সামলানোর কাজও করতে হবে। এ ছাড়া, স্টেশনের গেট বন্ধ করার জন্য বাণিজ্যিক বিভাগের এক জন সহায়ক কর্মী থাকবেন। গিরিশ পার্ক, সেন্ট্রাল, ময়দান, মহানায়ক উত্তমকুমার এবং কবি সুভাষ স্টেশনে এক জন করে পয়েন্টম্যান রাখার কথাও বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্টেশনে বদলি করা হয়েছে বহু কর্মীকে।

এপ্রিলের শুরু থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে বলে সূত্রের খবর। মেট্রো কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত জানার পরে কর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য বাড়তি টাকা কাটছাঁট করায় ক্ষোভ গোপন রাখেনি কর্মী সংগঠনগুলি। মেট্রোকর্মীদের একাংশের আরও অভিযোগ, বেশি রাতে কাজ মিটিয়ে দূরের এলাকার কর্মীরা বাড়ি ফিরতে না পারলে তাঁদের পরের দিন আবার সকাল অথবা দুপুরের শিফটে কাজ করতে হবে।

Advertisement

কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই সমস্ত দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, রাতের মেট্রোয় টিকিট কাউন্টার বন্ধ থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু স্মার্ট কার্ডের যাত্রীরাই সফর করেন। ফলে, কর্মীদের কাজের চাপ বেশি থাকে না। রেল মন্ত্রক নীতিগত ভাবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত সময়ের ভাতা দিয়ে কাজ করানোর পক্ষপাতী নয়। পাশাপাশি তাঁদের দাবি, এই ব্যবস্থা যাত্রী পরিষেবায় প্রভাব ফেলবে না।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল কর্মী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রথমে বিভিন্ন স্টেশনের একাধিক প্রবেশপথ বন্ধ রাখা, পরে বুকিং কাউন্টার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তার পরে যাত্রীপিছু ভাড়া বাড়িয়েছেন। এ বার কর্মীদের অতিরিক্ত সময়ের টাকাও তাঁরা বন্ধ করবেন। খরচ কমানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে যাবতীয় ক্ষতি স্বীকার করতে হচ্ছে শুধুমাত্র যাত্রী ও মেট্রোর কর্মীদেরই। কর্তাদের পরিকল্পনার ত্রুটির দায় কে নেবে?’’ মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement