Mother and son

বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ না রাখার শাস্তি! সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে ছেলেকে বাড়ি ছাড়তে বলল বীরভূম প্রশাসন

বীরভূমের সিউড়ি পুরসভার অরবিন্দপল্লি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা বিনোদিনী মণ্ডলের অভিযোগ, স্বামী মারা যাওয়ার পরে বড় ছেলে দিলীপ কার্যত তাঁকে ত্যাগ করেছেন। দেখভাল তো দূরের কথা, তাঁর নামে থাকা বাড়িটি ছেলে ও পুত্রবধূ দখল করে বসে আছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ১৬:৩৩
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি ছেলে। বৃদ্ধা মায়ের খাওয়া-থাকা, চিকিৎসা, কোনও কিছুরই বিন্দুমাত্র খেয়াল রাখেননি ছেলে। শেষমেশ হতাশ মা দ্বারস্থ হলেন প্রশাসনের। মহকুমাশাসকের নির্দেশ, মায়ের কিংবা পৈতৃক সম্পত্তির সূচ্যগ্র ভাগও পাবেন না ছেলে। বীরভূমের ঘটনা।

Advertisement

বীরভূমের সিউড়ি পুরসভার অরবিন্দপল্লি এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা বিনোদিনী মণ্ডলের অভিযোগ, স্বামী মারা যাওয়ার পরে বড় ছেলে দিলীপ কার্যত তাঁকে ত্যাগ করেছেন। দেখভাল তো দূরের কথা, তাঁর নামে থাকা বাড়িটি ছেলে ও পুত্রবধূ দখল করে বসে আছেন। এ নিয়ে গত বছরের ১২ জুন সদর মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বিনোদিনী। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে প্রশাসন।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সমস্ত তথ্য যাচাইয়ের পর মহকুমাশাসক সুপ্রতীক সিংহ দুই পক্ষকে ডেকে শুনানির আয়োজন করেন। কয়েক দফার শুনানির পরে সম্প্রতি তিনি নির্দেশ দেন, মায়ের নামে থাকা জমিতে তৈরি বাড়ি ছাড়তে হবে ছেলেকে। যদিও সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেছেন দিলীপ। তবে মহকুমাশাসকের নির্দেশ মেনে সোমবার পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে উচ্ছেদ করতে উদ্যোগী হয়। সেই সময় দিলীপ বা তাঁর স্ত্রী কেউই বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী উচ্ছেদপ্রক্রিয়ায় তাঁরা নিশ্চিত করবেন নির্দেশ কার্যকর করার।

Advertisement

বিনোদিনী বলেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে আমাকে দেখেনি। উপরন্তু আমার বাড়িও দখল করে বসে ছিল। আমি কষ্ট করে মানুষ করেছি, চাকরির জন্য দরবার করেছি। কিন্তু ছেলেকে মানুষ করতে পারিনি। কুলাঙ্গার তৈরি করেছি। শেষ বয়সে একটু শান্তি চাই।’’ এ নিয়ে সদর মহকুমাশাসক সুপ্রতীক বলেন, ‘‘আমাদের তদন্তে অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। ছেলেও তা স্বীকার করেছেন। দ্রুত সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।’’ প্রশাসনের পদক্ষেপে খুশি বিনোদিনীর আইনজীবী কমলিকা চট্টোপাধ্যায় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই নির্দেশ একটি দৃষ্টান্ত। প্রত্যেক বাবা-মায়ের জানা উচিত যে, প্রয়োজনে সন্তানের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার তাঁদের রয়েছে। মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে, আইন কীভাবে কঠোর হতে পারে, তা মনে করিয়ে দিল সিউড়ির এই ঘটনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement