প্রতীকী ছবি।
১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ডেপুটি চিফ লেবার কমিশনার’-এর আসানসোল কার্যালয়ে ‘অ্যাডিশনাল লেবার কমিশনার’ (এএলসি) নেই। কিছু দিন আগে পর্যন্ত দুর্গাপুরের কার্যালয় থেকে সপ্তাহে দু’দিন ‘এএলসি’ আসানসোলে আসছিলেন বলে জানান বিচারপ্রার্থীদের একাংশ এবং আইনজীবীরা। কিন্তু এখন তা-ও বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে নানা বিষয়ের নিষ্পত্তি হতে সমস্যা হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘চিফ লেবার কমিশনার’-এর দফতরের অধীনে রয়েছে এই কার্যালয়গুলি। এই কার্যালয়গুলি এবং দফতর নানা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের গ্র্যাচুইটি, শ্রম-সংক্রান্ত ও সংস্থার বিরুদ্ধে বেতন-সহ নানা অভিযোগের প্রতিকারের চেষ্টা করে। এ ছাড়া, ‘সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাইবুনাল কাম লেবার কোর্ট’-এর রায় বলবৎ করার কাজটিও করে। এই দফতর থেকেই সরাসরি ট্রাইবুনাল কোর্ট ও শ্রম মন্ত্রকের কাছে নানা বিষয় পাঠানো হয়। আবার, এএলসি গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত মামলা রিজিওনাল লেবার কমিশন, ডেপুটি চিফ কমিশনারের কাছে পাঠান। তার পরে সেখানকার রায় পছন্দ না হলে বিচারপ্রার্থীরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ডেপুটি চিফ কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘এএলসি’-রা মূলত গ্র্যাচুইটি সংক্রান্ত নানা অভিযোগ, মামলা খতিয়ে দেখেন।
কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক ‘ইউপিএসসি’-র মাধ্যমে ‘এএলসি’ নিয়োগ করে। কিন্তু ২০১৯-এর মার্চ থেকে আসানসোলে ডেপুটি চিফ লেবার কমিশনারের কার্যালয়ে ‘এএলসি’ নেই। পাশাপাশি, সমস্যা বাড়িয়েছে ‘সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাইবুনাল কাম লেবার কোর্ট’-এর আসানসোল শাখায় ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে বিচারক না থাকাও।
আসানসোলে ‘এএলসি’ না থাকায় নানা মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে অভিযোগ। অথচ, আসানসোলের এই কার্যালয়টির উপরে পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ পর্যন্ত এলাকা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা ভরসা করেন।
বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের অবসরপ্রাপ্ত ঠিকাকর্মী সুনীল ঘোষ, সঞ্জয় ঢাং, পঙ্কজকুমার নায়েক, মুক্তিরাম কর্মকারেরা জানান, তাঁরা মোট ৫০ জন ঠিকাকর্মী বছর দু’য়েক আগে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু গ্র্যাচুইটির টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা ‘এএলসি’-র কাছে আবেদন জানান। কিন্তু সে আবেদনের এ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি। আইনজীবী সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “কিছু দিন আগে পর্যন্ত দুর্গাপুর থেকে এএলসি সপ্তাহে দু’দিন আসছিলেন। কিন্তু, এখন তা-ও বন্ধ। ফলে, অনেক বিচারপ্রার্থীর বিচারের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে।”
ডেপুটি চিফ লেবার কমিশনার (পটনা) মিনাকেতন ধুরুয়া এই মুহূর্তে আসানসোলেরও দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি অবশ্য এ দাবি মানেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবাই মিলে কাজ ভাগ করে নিয়ে থাকি।’’