—প্রতীকী চিত্র।
বর্ধমানের হোটেলে রমরমিয়ে চলছিল মধুচক্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেই হোটেলে হানা দিল পুলিশ। উদ্ধার করা হল এক নাবালিকা-সহ মোট আট জনকে। হোটেলের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আরও দু’জনকে খুঁজছে পুলিশ।
বর্ধমান থানার অন্তর্গত মেটেল ডিভিসি এলাকার ঘটনা। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই একটি হোটেল চালাতেন প্রশান্ত মাল। ওই হোটেলে দূরদূরান্ত থেকে মহিলাদের নিয়ে এসে মধুচক্র চালানো হত বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রশান্ত বীরভূমের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লীর মাঠপাড়া এলাকায় থাকেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মধুচক্র চালানোর বিষয়ে জড়িত আরও দু’জনের কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, মধুচক্র চালানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রশান্ত নিজেও। তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারার পাশাপাশি পকসো আইনেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
বর্ধমানের ওই মধুচক্রের বিষয়ে বুধবার দুপুরে থানায় খবর দেয় নদিয়ার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। অভিযোগ, হোটেলে মহিলাদের আটকে রাখা হচ্ছে। এর পরেই বর্ধমান থানার আইসি দিব্যেন্দু দাসের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী হোটেলটিতে হানা দেয়। তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি এবং বর্ধমান চাইল্ড লাইনের মহিলা প্রতিনিধিও ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ডিএসপি হেড কোয়ার্টার অতনু ঘোষাল। ওই হোটেলের ঘর থেকে সাত জন পূর্ণবয়স্ক মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিল এক কিশোরীও। তাঁরা কেউ বনগাঁ, কেউ কৃষ্ণনগর, কেউ জলপাইগুড়ি, কেউ সিঙ্গুরের বাসিন্দা। হোটেলে মধুচক্র চালানোর বেশ কিছু প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কিছু নথি এবং হোটেলের রেজিস্ট্রার।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ম্যানেজার স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে মহিলাদের এনে হোটেলে রাখা হত খদ্দেরদের মনোরঞ্জনের জন্য। বিনিময়ে দেওয়া হত টাকা। তবে হোটেল ছেড়ে তাঁরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে টাকা আটকেও রাখা হত অনেকের। এ বিষয়ে মহিলাদের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই হোটেলের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।