arrest

পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ২ শিশু কন্যাকে খুন! রায়নার ঘটনায় গ্রেফতার বাবা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২১ ১৯:৫০
Share:

রায়নায় ২ মেয়েকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার বাবা হাজিবুল লায়েক। নিজস্ব চিত্র

পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই দুই শিশুকন্যাকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে বাবা। শনিবার পূর্ব বর্ধমানের রায়নার ওই ঘটনায় এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ওই কাণ্ডে ওই দুই শিশুর মা শিউলি বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে বাবা হাজিবুল লায়েককে রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পেশায় টোটোচালক হাজিবুল।

Advertisement

শনিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার খালেরপুল গ্রামের বাসিন্দা হাজিবুলের বাড়িতে মেলে তার দুই কন্যা সুমি খাতুন (৮) এবং রুবি খাতুনের (৬) দেহ। দুই মেয়ের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু নিয়ে মা শিউলি রায়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্বামী হাজিবুল লায়েক, শাশুড়ি হুসনিহারা বিবি-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে। শিউলির অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে হাজিবুলই পরিকল্পনা করে তার ২ মেয়েকে হত্যা করেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ। রবিবার হাজিবুলকে গ্রেফতার করা হয়।

খালেরপুল এলাকায় বর্ধমান-আরামবাগ রোডের ধারে হাজিবুলের ২ কামরার বাড়ি। সেই বাড়ির কাছেই রাস্তার পাশে রয়েছে হাজিবুলের বৃদ্ধা মা হুসনিহারার চায়ের দোকান। পুলিশ জানতে পেরেছে, শিউলি শনিবার তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন খণ্ডঘোষের দইচাঁদা গ্রামে তাঁর বাবার বাড়িতে। সুমি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। রুবি গ্রামেরই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিল। বিকেলে হাজিবুল নিজেও বাড়িতে ছিল না। সে টোটো নিয়ে বেরিয়েছিল। শনিবার বিকাল ৫টা নাগাদ সুমি এবং রুবির দেহ পাওয়া যায়।

Advertisement

প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, ২ শিশু বাড়িতেই কোনওভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। হুসনিহারা বলছেন, ‘‘আমি তখন চায়ের দোকানে ছিলাম। ২ নাতনি বাড়ির উঠোনে খেলছিল। হঠাৎই তাদের চিৎকার শুনে আমি দোকান থেকে বাইরে বেরোই। দেখি, ওদের শরীরে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রয়েছে।’’ যদিও, শাশুড়ির বক্তব্য মানতে নারাজ শিউলি। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর সঙ্গে অন্য মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সে কথা জানার পর থেকে হাজিবুল তাঁর উপর নির্যাতন চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিউলি। তাঁর দাবি, প্রাণে বাঁচতে খণ্ডঘোষে বাবার বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, সেই সময় মেয়েদের নিয়ে যেতে চাইলেও তাদের আটকে রাখে হাজিবুল এবং তার বাড়ির লোকজন। পুলিশের দাবি, জেরায় হাজিবুল জানিয়েছে, গাছের সঙ্গে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে বাল্ব লাগিয়ে ছিল শিউলি নিজেই। বিদ্যুৎ দফতর পুলিশকে জানিয়েছে , ‘শর্ট সার্কিট’-এর জেরে এই কাণ্ড ঘটেছে।

বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘হাজিবুলের বিরিদ্ধে বধূ নির্যাতন এবং খুনের মামলা দায়ের হয়েছে।’’ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে দুই শিশুর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement