জামিনের আবেদন এ বারও খারিজ অনুব্রতের। — ফাইল ছবি।
আবারও জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। আরও ১৪ দিনের জন্য জেলই ঠিকানা তাঁর। শুক্রবার, সিবিআইয়ের সওয়ালে হাতিয়ার করা হয় সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ‘বাঘ’ মন্তব্যকে। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারক অনুব্রতের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। পরবর্তী শুনানি ২৫ নভেম্বর।
শুক্রবার অনুব্রতকে তোলা হয়েছিল আসানসোল আদালতে। সেখানে কেষ্টর আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। তার বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। সিবিআইয়ের আইনজীবী সওয়াল করেন, অনুব্রত এক জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি এতটাই প্রভাবশালী যে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি সাক্ষীদের হুমকি দেবেন, যা তদন্তকে প্রভাবিত করবে। তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করারও অভিযোগ করেন আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র। এই প্রেক্ষিতেই কালীচরণ হাতিয়ার করেন সম্প্রতি বীরভূমে গিয়ে বলা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য। প্রসঙ্গত, ফিরহাদ দাবি করেছিলেন, অনুব্রত বাঘ। তাঁকে কত দিন খাঁচায় বন্দি করে রাখবে! আইনজীবী এই প্রসঙ্গ তুলে সওয়ালে বলেন, ‘‘বুঝতেই পারছেন, অনুব্রত কতটা প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি যে, রাজ্যের মন্ত্রী পর্যন্ত তাঁকে বাঘ হিসেবে অভিহিত করছেন। তিনি বেরিয়ে এলে সাক্ষীদের হুমকি দেবেন।’’ ইতিমধ্যেই একাধিক সাক্ষীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। কেস ডায়েরিতে তাঁদের নাম রয়েছে বলেও জানানো হয়। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের সওয়াল, কোটি কোটি টাকার বেনামী সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। গরু পাচার করে যে কোটি কোটি টাকা আসত, তা দিয়ে বহু বেনামী সম্পত্তি কিনেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
এই প্রসঙ্গেই অনুব্রতের আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করেন, কোটি কোটি টাকা বেনামী সম্পত্তির যে দাবি সিবিআইয়ের তরফে করা হচ্ছে তার তদন্ত তো করবে ইডি। তাহলে সিবিআই জামিনের বিরোধিতা করছে কেন? পাশাপাশি অনুব্রতের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত জানান, গরু পাচার-কাণ্ডে অভিযুক্তদের জামিন হয়ে গিয়েছে। অথচ, ৯২ দিন ধরে জেলে রয়েছেন অনুব্রত। তাঁর সওয়াল, ‘‘যে কোনও শর্তে অনুব্রতকে জামিন দেওয়া হোক।’’ তাঁর সংযোজন, প্রয়োজন হলে বীরভূম জেলায় প্রবেশ করবেন না অনুব্রত।
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আরও ১৪ দিন অনুব্রতকে জেলে রাখার নির্দেশ দেন। পরবর্তী শুনানি ২৫ নভেম্বর।