ভাঙচুরের প্রতিবাদে বন্ধ মিনিবাস, বেনাচিতির গোলমালে ধৃত ৪

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বেনাচিতি বাজার এলাকায় মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় মোটরবাইক আরোহী যুবক সঞ্জয় গুপ্তের। এর পরেই তেতে ওঠে এলাকা। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ চলে দিনভর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১০
Share:

মিনিবাস রাস্তায় নামেনি। সেই সুযোগে নিজেদের মধ্যে ক্রিকেট খেলায় মাতলেন বাসের কর্মীদের অনেকে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যুর পরে বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার দিনভর দুর্গাপুরে বন্ধ রাখা হল মিনিবাস। সপ্তাহের প্রথম দিন কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। পুলিশের সঙ্গে বাস মালিকদের আলোচনার পরে বিকেলে বাস চলাচল শুরু হয়।

Advertisement

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বেনাচিতি বাজার এলাকায় মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় মোটরবাইক আরোহী যুবক সঞ্জয় গুপ্তের। এর পরেই তেতে ওঠে এলাকা। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ চলে দিনভর। দু’দফায় কয়েকটি মিনিবাসে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় সরণিতে। নাকাল হন সাধারণ মানুষজন। ঘণ্টা সাতেক পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাস্তা অবরোধ ও দু’দফায় মিনিবাসে ভাঙচুরের ঘটনায় বিজেপির যুব মোর্চার নেতা ভোলা সাউ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগও এনেছে পুলিশ।

Advertisement

মিনিবাসে ভাঙচুরের প্রতিবাদে ঘটনার পর থেকেই পরিষেবা বন্ধ করে দেন বাসকর্মীরা। নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগে সোমবারও বাস না চালানোর কথা জানান তাঁরা। বাস মালিকেরা তা সমর্থন করেন। ফলে, এ দিন শহরের সব রুটেই মিনিবাস বন্ধ ছিল। সকালে রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। এই সুযোগে বেশ কিছু অটো ও টোটো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে বলে অভিযোগ। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা। স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে মিনিবাস ধরতে গিয়ে স্ট্যান্ড ফাঁকা দেখে শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য বলেন, ‘‘এ ভাবে হঠাৎ-হঠাৎ মিনিবাস বন্ধ করে দেওয়ার আগে আমাদের মতো নিত্যযাত্রীদের সমস্যার কথাও ভাবা উচিত।’’

দ্রুত সমস্যা মেটাতে পুলিশ মিনিবাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। মিনিবাস মালিকেরা বাসকর্মীদের নিরাপত্তা, ভাঙচুর মিনিবাসের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। এমনকি, রবিবারের দুর্ঘটনা আদৌ মিনিবাসের ধাক্কায় হয়েছে কি না, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তা খতিয়ে দেখার দাবিও জানানো হয়। বাসমালিকদের একটি সংগঠনের তরফে কাজল দে দাবি করেন, ‘‘মিনিবাসের আগে একটি গাড়ি ছিল। আমাদের অনুমান, সেই গাড়ি ধাক্কা দেয়। গাড়ির মালিক মাছ বাজারের এক ব্যবসায়ী। তড়িঘড়ি তিনি গাড়িটি সরিয়ে দেন বলে মনে করা হচ্ছে।’’

পুলিশ মিনিবাস মালিকদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয়। এর পরেই বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেন মালিকেরা। কিছু মিনিবাস রাস্তায় নামে। তবে আজ, মঙ্গলবার সকালের আগে পরিষে‌বা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না বলে জানান বাসকর্মীরা। মৃতের পরিবারের ক্ষতিপূরণের দাবি প্রসঙ্গে বাসমালিকদের বক্তব্য, দুর্ঘটনার জন্য মিনিবাস দায়ী, তা প্রমাণ হলে সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণের জন্য মালিক সংগঠনের তরফে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement