Asansol

‘মেয়েটাকে আর দেখতে পাব না’, শোকে আকুল আসানসোলে মৃত প্রীতির পরিবার

বুধবার বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারির উদ্যোগে একটি কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান হয়েছিল রামকৃষ্ণডাঙায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অনুষ্ঠানে প্রবল ভিড় হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৩:৩৯
Share:

প্রীতি সিংহ। — নিজস্ব চিত্র।

আক্ষেপ যাচ্ছে না পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙার সিংহ পরিবারের। বুধবার আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙায় গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে ছিল শিবচর্চা এবং কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান। শুভেন্দু চলে যাওয়ার পর হুড়োহুড়ির জেরে সেখানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। মৃতদের তালিকায় রয়েছে রামকৃষ্ণডাঙার বাসিন্দা, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি সিংহ। তার মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা পরিবার।

Advertisement

বুধবার রামকৃষ্ণডাঙায় মেয়ে প্রীতিকে নিয়ে শিবচর্চা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তার মা কিরণ সিংহ। সেই আক্ষেপ যাচ্ছে না কিরণের। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গরিব পরিবার। তবুও মেয়েটার যতদূর পড়ার ইচ্ছা ছিল, তত দূর ওকে পড়াতাম আমরা। ও বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হোক, এটাই চেয়েছিলাম। কিন্তু কোথা থেকে কী হয়ে গেল। আমার মেয়েটা যে চলে গেল, এখন কী হবে!’’ প্রীতি স্থানীয় একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

প্রীতির কাকিমা মণি কুমারী সিংহের বক্তব্য, ‘‘এমনটা না ঘটলেই হত। আমরা এর বিচার চাই। আমরা তো শিবচর্চা ভেবেই গিয়েছিলাম। জানি না ওখানে কেন এত ভিড় হল। ওখানে এমন ঘটনা ঘটবে কেউ ভাবিনি। ওখানে এত ভিড় হয়েছিল যে, আমরা কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না।’’ বছর আষ্টেক আগে মৃত্যু হয়েছে প্রীতির বাবা মুন্না সিংহের। তার পর থেকে সংসার চালান প্রীতির দাদা বিকাশ। বোনের মৃত্যুর সুবিচার চাইছেন তিনি। ওই একই দাবি তুলেছেন রামকৃষ্ণডাঙার বাসিন্দা চাঁদমণি দেবী এবং কাল্লার বাসিন্দা ঝালি বাউড়ির পরিবারেরও। চাঁদমণি এবং ঝালি দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে বুধবার সন্ধ্যায় পদপিষ্ট হয়ে।

Advertisement

বুধবার আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী তথা বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারির উদ্যোগে একটি কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠান হয়েছিল রামকৃষ্ণডাঙায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অনুষ্ঠানে প্রবল ভিড় হয়েছিল। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হওয়ার পর চৈতালির তরফে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতা জিতেনের অবশ্য মত, ‘‘রাজনীতিতে বিরোধীদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু সেটার জন্য রাজনৈতিক ভাবে কাজ করলে ভাল হয়। একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিন জনের প্রাণ গিয়েছে। এটাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা ঠিক হচ্ছে না। আমাদের তিন জন কাছের মানুষ মারা গিয়েছেন। আমরা তাঁদের পরিবারের পাশে আছি।’’ তবে বুধবারের সন্ধ্যায় আচমকা ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement