—ফাইল ছবি।
ভাঙনের করাল গ্রাস ক্রমশ এগিয়ে আসছে কপিলমুনির আশ্রমের দিকে। রোজই একটু একটু করে ভাঙছে সমুদ্র সৈকত। তাই এ বিষয়টি নিয়ে এ বার বিশেষ ভাবে নজর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালে যে কপিলমুনির মন্দির সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় ৪৭০ মিটার দূরে ছিল, ২০২৪ সালের অগস্ট মাসে সেই দূরত্ব কমে হয়েছে ২৭০ মিটার। এমন তথ্য হাতে আসার পরেই এ বিষয়ে সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর। পরে সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে সেচ দফতরের হাতে।
রাজ্যের ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলি সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দফতর। অগস্ট মাসে মানস ভুঁইয়া সেচ দফতরের দায়িত্বে আসার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের আশা, সেই পর্যায়েই এ বার কপিলমুনির আশ্রম রক্ষার ক্ষেত্রেও পদক্ষেপ সম্ভব হবে। গঙ্গাসাগরের সমুদ্র সৈকত থেকে কিছুটা দূরে হাঁড়িভাঙা চরা ছিল। এক সময় সাগরদ্বীপের মানুষ ভুটভুটিতে করে গিয়ে ওই চরায় মাছ ধরতেন। ওই চরার অন্য দিকে ছিল জম্বুদ্বীপ। যখন জম্বুদ্বীপ ভাঙতে শুরু করে, তখনই হাঁড়িভাঙা চরেও ভাঙন দেখা যায়। বর্তমানে সেই হাঁড়িভাঙা চরটি আর নেই। আর তার পর থেকেই সমুদ্রের ঢেউ সরাসরি গঙ্গাসাগরের সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়ছে। যার জেরে ভাঙন আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে।
গত পূর্ণিমার কটালে এক থেকে পাঁচ নম্বর সমুদ্র সৈকতের সংযোগকারী রাস্তাও পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে তিন ও চার নম্বর সমুদ্র সৈকতের পরিস্থিতিও আশঙ্কাজনক। গঙ্গাসাগরে সমুদ্রের ভাঙন কী ভাবে রোধ করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরকারি স্তরে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জুলাই মাসেই দুই নদী ও সমুদ্র বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করলেন সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। পরিদর্শনের সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাগরের বিডিও কানহাইয়া কুমার ও সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও। মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, "নদী ও সমুদ্র বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর রায়চৌধুরী ও বিভাস বর্মণ ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করছেন। জোয়ার ও ভাটার সময় তাঁরা দেখবেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় মাটির কী পরিস্থিতি হচ্ছে। দু’দিন তাঁরা এই এলাকায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তাঁরা একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। সেই রিপোর্ট সেচ দফতরে জমা দেওয়া হবে। আগামীতে এই ভাঙন কবলিত এলাকাকে কী ভাবে রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।’’