গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের সঙ্গে এ বার বাংলাদেশের কোনও প্রভাবশালীর যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অনুমান, কখনও সরাসরি, কখনও ঘুরপথে পদ্মাপারে গিয়েছে বাংলার দুর্নীতির অর্থ। সেখানে এক বা একাধিক প্রভাবশালীর মাধ্যমে সেই সব অর্থ বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ হতে পারে। ওই সূত্র ধরে ধৃত শঙ্কর ওরফে ডাকুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির পর তাঁর বেশ কয়েক জন ঘনিষ্ঠের উপর নজরদারি শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মধ্যে দুই অন্যতম বলা হচ্ছে শঙ্কর এবং শাহজাহান শেখকে। শঙ্কর এখন ইডির হেফাজতে। সন্দেশখালির শাহজাহান এখনও ইডির ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে এই ‘দুর্নীতি’তে মন্ত্রীর ডান এবং বাঁ হাত শঙ্কর এবং শাহজাহানকে নিয়ে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। যেমন, ইডি মনে করছে, শঙ্কর বিভিন্ন ফরেক্স সংস্থা তৈরি করে মন্ত্রীর কোটি কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রায় বদলে দুবাইয়ে পাঠিয়েছেন। শুধু দুবাইয়ে পাচার হওয়া টাকার অঙ্কটা প্রায় ২ হাজার কোটি। তবে অনেক সময় সরাসরি বিদেশি মুদ্রায় বদলে সরাসরি দুবাই যায়নি রেশন দুর্নীতির টাকা। ইডির একটি সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ হয়ে ঘুরপথেও ওই সব অর্থ দুবাই গিয়েছে। তা ছাড়া অনেক সময় শঙ্করের মাধ্যমে সরাসরি বাংলাদেশে অর্থ ‘পাচার’ হয়েছে।
কিন্তু ওপারে এই দুর্নীতির মূল হোতা কে? তারই খোঁজে রয়েছেন ইডি কর্তারা। আগেই ইডি দাবি করেছে, এ রাজ্যে দুর্নীতির টাকা দিয়ে প্রতিবেশী দেশে সাম্রাজ্য গড়েছেন সন্দেশখালির শাহজাহান। মন্ত্রীর টাকা তিনি নাকি সরাসরি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ করতেন। কিন্তু শঙ্করের যে বাংলাদেশ-যোগ, তার নেপথ্যে সীমান্ত লাগোয়া কোনও প্রভাবশালী বাংলাদেশি রয়েছেন বলে মনে করছে তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।
বস্তুত, বালুর বিরুদ্ধে ‘রেশন দুর্নীতি’র তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই ফিরে ফিরে আসছে বাংলাদেশ-যোগের কথা। এমনকি, রেশন দুর্নীতির টাকা জলপথে না কি স্থলপথে গিয়েছে, সে তথ্যও সংগ্রহ করেছে ইডি। ইডি সূত্রে এ-ও খবর, শঙ্করের মাধ্যমে বাংলাদেশে যাওয়া সব অর্থই যে রেশন দুর্নীতির এমনটা নয়। সেই মোটা অঙ্কের অর্থের উৎস জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা।