গরু পাচার মামলায় অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করেছে সিবিআই। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়ে বিপাকে পড়লেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূল নেতার জামিন মামলায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘প্রভাবশালী তকমা’।
শুক্রবার এই মামলায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘শুধু কয়েক জন সাক্ষী নন, বিচারকও হুমকির শিকার! মামলায় অন্য জামিন পাওয়া অভিযুক্তদের থেকে অনুব্রত অনেক বেশি প্রভাবশালী এটা স্পষ্ট।’’
অনুব্রতের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘এই মামলায় অভিযুক্ত ইমানুল হক জামিন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট থেকে। জামিন দেওয়া হয়েছে সতীশ কুমারকেও। যিনি এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত।’’
গত ৬ অক্টোবর এই মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। প্রায় ৪ মাস জেলে রয়েছেন অনুব্রত। ইডির এফআইআর খারিজের আবেদন করা হয়েছে। অনুব্রতকে শুধু প্রভাবশালী তকমা দেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন তিনি। আগে তদন্তে সহযোগিতা করা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে তার জন্যই কি অপরাধবোধ কাজ করছে?’’
বিচারপতি বাগচী পাল্টা বলেন, ‘‘এটা বাস্তব যে যাঁরা জামিন পেয়েছেন, তাঁদের থেকে মামলাকারী অনেক বেশি প্রভাবশালী। এক বিচারক হুমকির কথা জানিয়েছেন। এটা আদালত লঘু করে দেখতে পারে না। সিবিআই জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ এক সাক্ষী নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছেন।’’
অনুব্রতের আইনজীবী পাল্টা বলেন, ‘‘এই বিষয়গুলি কেস ডায়েরিতে লেখা হলেও, প্রমাণিত সত্য নয়। প্রমাণ হলে জামিন দেবেন না। এই মামলায় অনুব্রত মূল চক্রী নন, মূল চক্রী ইমানুল হক। এখনও অবধি অনুব্রতের বিরুদ্ধে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়নি সিবিআই। গরু পাচারে ইমানুলকে নিরাপত্তা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শুধু।’’
সিবিআইয়ের তরফে আদালতে বলা হয়, ‘‘বগটুই মামলার সঙ্গে যুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর পর এই মামলার তদন্তকারী অফিসারদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। তাই এই অবস্থায় অনুব্রতের জামিন দেওয়া কোনও ভাবেই উচিত নয়।’’
জামিনের আবেদন করেও অনুব্রতের আইনজীবী কপিল সিব্বল মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি করেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ ডিসেম্বর।