বলরামপুর ব্লকে শুরু হল সার্বিক গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি। —নিজস্ব চিত্র।
বড়দিনের পরদিন থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এলটিআইমাইন্ডট্রি-র হাত ধরে পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকে শুরু হল সার্বিক গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচি (ইন্টিগ্রেটেড ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বা আইভিডিপি)। কর্মসূচিটি এলটিআইমাইন্ডট্রি-র সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি বা সিএসআর) উদ্যোগ। পরিকল্পনাটিকে বাস্তব রূপ দিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইএজিএল লাইভলিহুড ফাউন্ডেশন। পুরুলিয়ার গ্রামগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি করে স্থায়ী উন্নয়ন সুনিশ্চিত করাই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
নীতি আয়োগের ‘উন্নয়নকাঙ্ক্ষী ব্লক’গুলির তালিকায় পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকটির নাম রয়েছে। আদিবাসী জনসংখ্যা এবং উন্নয়নের প্রয়োজনের নিরিখে ব্লকটি বার বার নানা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সে কারণেই এই ব্লকটিকে বেছে নিয়েছেন এলটিআইমাইন্ডট্রি কর্তৃপক্ষ। গ্রামোন্নয়ন কর্মসূচিতে মূলত পাঁচটি প্রধান বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উন্নয়ন, স্কুলগুলির সংস্কার, কোচিং সেন্টার তৈরি, কৃষি সহায়তা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এসটিইএম)-র উন্নতির স্বার্থে স্কুলে স্কুলে ল্যাবরেটরি তৈরি এবং সৌর-সুরক্ষা ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে পাঁচটি আঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যায় শিক্ষামূলক সরঞ্জাম, ইনফোগ্রাফিক্স এবং খেলার সরঞ্জাম আনা হয়েছে। এর ফলে ৪৭৫ জন শিশুর উপযুক্ত শিখন-খেলার পরিবেশ তৈরি হবে। এ ছাড়া পাঁচটি স্থানীয় স্কুলের পরিকাঠামো উন্নত করে সেগুলিকে মডেল স্কুলে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বারাউরমা ও চণ্ডীতলা হাই স্কুলে বিনামূল্যে দু’টি কোচিং সেন্টারও খোলা হয়েছে, যা ছাত্রদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। ছাত্রদের বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দিতে দু’টি হাই স্কুলে তৈরি করা হয়েছে উন্নত ল্যাবরেটরি। কৃষিক্ষেত্রে সহায়তার জন্য ২২,৫০০ ঘনমিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ফার্ম পন্ড তৈরি করা হয়েছে, যা প্রায় ৪৫০ একর জমিতে সেচের কাজে সহায়তা করবে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ব্লকগুলিতে সৌরচালিত সংকেত ব্যবস্থাও স্থাপন করা হয়েছে।
এলটিআইমাইন্ডট্রি-র চিফ সাসটেনেবিলিটি অফিসার পনীশ রাও বলেন, ‘‘আইভিডিপি-র সূচনা আমাদের গ্রামীণ সম্প্রদায়ের টেকসই উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। স্থানীয় সংগঠনগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা বলরামপুরের বাসিন্দাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোয় দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনতে চাই।’’ বলরামপুর ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘উদ্যোগটির ফলে বলরামপুর ব্লকের প্রায় ২২,৫০০ বাসিন্দা উপকৃত হবেন। ল্যাবগুলি ছাত্রদের বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করবে। পাশাপাশি, উন্নত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি ছোট শিশুদের পুষ্টি ও শিক্ষার চাহিদা পূরণ করবে।’’