শুভ্রা রায় ও অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব চিত্র
দলের শহর সভাপতির এক জন রয়েছেন। তা সত্ত্বেও অন্য এক নেতাকে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরের সংগঠন দেখার দায়িত্ব দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কাটোয়ার সাংগঠনিক দায়িত্ব রয়েছে তৃণমূলের কাটোয়া শহর সভাপতি শুভ্রা রায়ের উপর। পাশাপাশি অনুব্রত দায়িত্ব দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অনুব্রতর কথা শুনে তিনি কাটোয়া শহরে কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন অরিন্দম। এ নিয়ে দলের ভিতরেই উঠছে নানা প্রশ্ন।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়েই রবিবার বিকেলে মঙ্গলকোটের দলীয় সভায় অনুব্রত কাটোয়া শহরের দায়িত্ব দেন অরিন্দমকে। রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘কাটোয়া শহরের দায়িত্বে তো ইতিমধ্যে এক জন রয়েছেন। তার পরেও আর এক জন কী ভাবে, বুঝতে পারছি না।’’
রবিবার বিকেলে মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামের যোগদান শিবিরে অনুব্রত বলেন, ‘‘অরিন্দম পুরনো কর্মী। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করছে। ও এখন থেকে কাটোয়া শহরের সংগঠন দেখাশোনা করবে।’’ যদিও মঞ্চ থেকে তিনি নামার পর তিনি বলেন, ‘‘আমি দায়িত্বের কথা বলিনি। আমি বলেছি, অরিন্দম পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতির সঙ্গে থেকে কাজ করবেন।’’
ঘটনার প্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ পাল্টা বলেছেন, ‘‘জেলার ১৬টি বিধানসভার মধ্যে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকার সাংগঠনিক দিকটি দীর্ঘ দিন ধরে অনুব্রত দেখেন। এই তিন বিধানসভা বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। কিন্তু কাটোয়া শহরে দলের সভাপতি শুভ্রা রায় আছেন। সেখানে আর এক জন কেউ কাজ করবেন কী করে? এটা ওঁর (অনুব্রতর) ব্যক্তিগত মত। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’
যদিও দ্বন্দ্বের কোনও কারণ দেখছেন না অরিন্দম। তিনি বলছেন, ‘‘আমি দলের শহর সভাপতি এবং জেলা সভাপতির নির্দেশ মতো কাজ করব। এতে কোন দ্বন্দ্ব হবে না। আমরা ২০২৪ সালের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’’
এই বিষয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু অবশ্য কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, বিষয়টি জানেন না। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরেই একাংশ প্রশ্ন করছেন, কাটোয়া তো অনুব্রতের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে না, তা হলে কী করে তিনি এই অংশের সাংগঠনিক দায়িত্ব কাউকে দিতে পারেন? সব মিলিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে এই বিষয়ে।