মানিক ভট্টাচার্য নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে চলা মামলার ভিত্তিতে আদালতে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাইলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা মন্তব্য করলেন, ‘‘আপনাকে অপমান করার কোনও উদ্দেশ্য নেই আদালতের। কিন্তু আপনি আদালতের নির্দেশ মানেননি। তাই এই পদক্ষেপ। আপনি ল’কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন? তার পরও আইনকে অবহেলা করেছেন?’’ শুনানির পর পর্ষদ সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আদালতে পুরো বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে। আদালত সন্তুষ্ট। আমিও অবমাননার দায় থেকে মুক্ত। এ ছাড়া অন্য যে বিষয়গুলি আদালতের বিচারাধীন, সেই নিয়ে আমি কিছু বলব না।’’
এর আগেই বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় একটি মামলার শুনানিতে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু দু’বছর আগে দেওয়া সেই নির্দেশ মেনে নিয়োগ করা হয়নি। সেই কারণেই আদালত অবমাননার দায়ে পড়েন পর্ষদ সভাপতি। নতুন মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন মানিককে। সেই মতো তিনি উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাইলেন।
বিচারপতি সোমবার শুনানি চলাকালীন মন্তব্য করেন, ‘‘আপনি পর্ষদের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। আপনার ইগো থাকতে পারে না। নাগরিকের সঙ্গে নাগরিকের লড়াই চলতে পারে না। আপনার প্রচুর ক্ষমতা। অনেক টাকা। যিনি মামলাকারী তাঁর কি আছে?’’
তবে সোমবার আদালতে স্বস্তিও পান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। তাঁকে আদালত অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় আদালত।
আদালতে পর্ষদ সভাপতি জানান, ১০ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে মামলাকারী নীলোৎপল গুছাইতকে। পর্ষদ সভাপতির এই দ্রুত পদক্ষেপে খুশি হয় আদালত। বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘আপনি তাঁদের পিতৃতুল্য। তাই সে রকম ব্যবহার করাই উচিত। আপনি একটি আইনের কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। এখানে অনেকেই আপনার ছাত্র। আদালত অবমাননার দায়ে আপনাকে ডেকে পাঠানো হবে, এটা ভালো লাগে না। যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করুন। এখন সম্ভব না হলে ভবিষ্যতে যে শূন্য পদগুলি তৈরি হবে, সেখানে নিয়োগের ব্যবস্থা করুন। এই চাকরিপ্রার্থীরা কত দিন আর লড়াই করবেন।’