প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার আরও এক। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ওএমআর শিট প্রস্তুতকারী সংস্থা এসএন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির এক কর্তা। সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃতের নাম কৌশিক মাজি। এর আগে সিবিআই তাঁকে তলব করেছিল। গত মাসে ওএমআর সংস্থার যে দুই আধিকারিকের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন কৌশিক। কৌশিকের দাশনগরে বাড়ি, অফিস-সহ ছ’টি জায়গায় তল্লাশিও চালানো হয়েছিল। এ ছাড়াও সেই সময় সল্টলেকের সৌরভ মুখোপাধ্যায় নামে এক আধিকারিকের বাড়িতে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর মিলেছিল, তাঁদের বাড়ি থেকে কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক-সহ বহু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
সিবিআই সূত্রে খবর, এসএন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নিয়োগ প্রক্রিয়ার উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং ওএমআর শিট প্রস্তুত করার দায়িত্বে ছিল। কৌশিক সেই সংস্থারই অন্যতম অংশীদার। নিয়োগকাণ্ডের তদন্ত চলাকালীন সোমবার দুপুরে এই সংস্থারই এক কর্মী পার্থ সেনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, পার্থই দুর্নীতির ‘মূল চাবিকাঠি’। সোমবার আলিপুর আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, ওএমআর শিটের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে সরাসরি ভাবে যুক্ত পার্থ। তিনিই অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করেছিলেন। পরে সেই তালিকা পর্ষদ অফিসে পৌঁছয়। তালিকায় নাম থাকা বেশ কয়েক জনের চাকরিও হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই।
পার্থকে সোমবার বিকেলে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, ২০০৭ সাল থেকে ওএমআর শিট তৈরির ওই সংস্থায় চাকরি করছেন বছর তেষট্টির পার্থ। তাঁর মেয়ে এবং জামাই দু’জনেই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক।
আদালতে সিবিআই দাবি করেছে, ২০১৭ সালে ৭৫২ জন অযোগ্য প্রার্থীর একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল এই ওএমআর সংস্থার অফিসে। পার্থই নাকি সেই তালিকা তৈরি করেছিলেন। তাঁর কাছে কিছু নামও এসেছিল। সেই নামগুলি থেকে একটি ‘ডিজিটাল’ তালিকা তৈরি হয়েছিল। পরে সেই তালিকা মেল করে পাঠানো হয় পর্ষদ অফিসে। সিবিআইয়ের দাবি, সেই ৭৫২ জনের ৩০০ জনের বেশি প্রার্থী পরে চাকরিও পেয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, এই মামলার তদন্তকারী হিসাবে সিবিআইয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজ়ড ডেটা’য় অনেক ভুল রয়েছে। আদালতে যে ওএমআর শিটের তথ্য বলে, যে নথি পেশ করা হয়েছে, তা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ, ওএমআর শিটের ডিজিটাইজ়ড ডেটা বলতে যা বোঝায়, তা আসলে ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পর্ষদ আদালতে যা পেশ করেছে, তা টাইপ করা তথ্য। আর সেই তথ্যে প্রশ্ন-উত্তরের অনেক বিকল্পেও ভুল রয়েছে।