ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
‘‘আমরা কি স্কুলে পড়ি নাকি! পার্টি বলেছে, তাই করলাম (সই)। কিন্তু এটার সঙ্গে আমি সহমত নই।’’ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে হাজিরা খাতায় সই করে এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেছিলেন কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অথচ মঙ্গলবার অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেই বেমালুম বিধানসভার হাজিরা খাতায় সই করতে ভুলে গেলেন তিনি। শুধু ফিরহাদই নয়, একই ভুল হল একঝাঁক মন্ত্রীর।
হাজিরা খাতায় সই না করার তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের সব তাবড় মন্ত্রীরা। বিধানসভায় এসে অধিবেশনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেননি বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান, জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, পরিবেশমন্ত্রী গোলাম রব্বানি, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কারামন্ত্রী অখিল গিরি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জমান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা।
বিধানসভার সেই হাজিরা খাতা। ছবি: সংগৃহীত।
দুপুর পর্যন্ত হাজিরা খাতা স্বাক্ষর না করলেও, অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে হাজিরা খাতায় সই করে যান খাদ্য প্রক্রিয়াকরণমন্ত্রী অরূপ রায়, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারাণী টুডু।
মঙ্গলবার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে রাখা ছিল মন্ত্রীদের হাজিরা খাতা। কে, কখন বিধানসভা অধিবেশনে প্রবেশ করছেন, সেই সময় উল্লেখ করে সই করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার নির্দেশেই শীতকালীন অধিবেশন থেকে সময় উল্লেখ করে হাজিরা খাতায় সই করার নিয়ম চালু হয়েছে। ঘটনাচক্রে সেই নিয়ম চালু হওয়ার পর মঙ্গলবারই ছিল দ্বিতীয় দিন। সেই দিনেই প্রায় বেশ কয়েক জন মন্ত্রী হাজিরা খাতায় সই করলেন না।
হাজিরা খাতায় সই না করলেও, বিধানসভার অধিবেশন শেষে দলীয় নির্দেশ মেনে সব মন্ত্রীদেরই দেখা গেল বিধানসভায় অম্বেডকর মূর্তির নীচে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ধর্নায় শামিল হতে।
যে ফিরহাদ হাজিরা খাতায় সই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। সেই ফিরহাদ হাজিরা খাতায় সই না করলেও, আগাগোড়া বিধানসভায় দলের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেল একেবারে সামনে থেকে। যদিও, পরিষদীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, মন্ত্রীদের হাজিরা খাতা তিনি নিয়মিত পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।