শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করা হল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অভিযোগ, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করেছেন তিনি। অন্য দিকে, স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেবে বিজেপি বলে জানালেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আজই (মঙ্গলবার) সচিবের কাছে প্রস্তাব জমা দেওয়া হবে।’’ তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিধানসভা সচিব সুকুমার রায়ের ঘরে গিয়ে স্পিকারের বিরুদ্ধে ডেপুটেশন জমা দেয় বিজেপি পরিষদীয় দল। তাঁরা এক গুচ্ছ অভিযোগ করেছেন স্পিকারের বিরুদ্ধে।
বস্তুত, মঙ্গলবার অধিবেশনের শুরু থেকেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়কদের নিয়ে ঘোরালো হয় পরিস্থিতি। বিজেপির টিকিটে জয়ী অথচ, তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়কদের স্পিকার বিজেপি বলেন। পরে স্পিকার সেই অংশ রেকর্ড থেকে বাদ দিয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে ‘সতর্ক’ করেন। তার পরই বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি বিধায়কেরা। ক্ষোভ দেখিয়ে বিরোধী দলনেতা-সহ বিরোধী বিধায়করা অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার আর আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
অন্য দিকে, সদনে অসংসদীয় আচরণের অভিযোগ করে বিরোধী দলনেতাকে সাসপেন্ড করার জন্য প্রস্তাব পেশ করে বক্তৃতা করেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। শাসকদলের অন্য বিধায়করা তাতে সমর্থন জানান।
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ মার্চ শুভেন্দু-সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড হন। ওই অধিবেশনের আগে দু’জন বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড হন। মোট সাত জন বিধায়ক সাসপেন্ড হন। পরে অবশ্য আদালতের হস্তক্ষেপে সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয় তাঁদের।
শুভেন্দুকে সাসপেন্ডের প্রস্তাব উত্থাপনের সময় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, ‘‘সাংবিধানিক পদকে কিছু না বলাই উচিত। আমার কাস্টডিয়ানকে কেউ যেন অবমাননা না করেন।’’
উল্লেখ্য, এর আগেও বিধানসভায় বিজেপিত্যাগী বিধায়কদের নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছে অধিবেশন কক্ষ। মঙ্গলবার শুভেন্দু অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমরা বিজেপির সদস্যরা যেখানে স্পিকারের কাছ থেকে সংবিধানের প্রোটেকশন পাচ্ছি না, সেখানে সংবিধান দিবসে মিষ্টি মিষ্টি কথা শুনে লাভ নেই। আমরা ভিতরেও বলেছি, এই হাউস সংবিধানের পরিপন্থী হয়ে কাজ করছে।’’
অন্য দিকে, বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে স্পিকার বিমান বলেন, ‘‘রাস্তার মোড়ে যা বলা যায়, তা বিধানসভা কক্ষে বলা যায় না।’’