লঙ্গরখানায় লুচি বেলছেন রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে কন্যা আজানিয়া (রুজিরার ডান দিকে) এবং পুত্র আয়াংশ (রুজিরার বাঁ দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। যিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখোমুখি হন, তিনিই আবার লঙ্গরখানায় বসে লুচিও বেলেন। তিনি— রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। সম্পর্কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির বৌমা। সোমবার তাঁকে দেখা গিয়েছে শহিদ মিনার ময়দানে শিখ ধর্মগুরু গুরু নানকের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ঢালাও ভোজের লঙ্গরে বসে পরের পর লুচি বেলতে। সঙ্গে পুত্র এবং কন্যা।
শহিদ মিনার ময়দানে প্রতি বছরই গুরু নানকের জন্মদিনে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন কলকাতার শিখ ধর্মাবলম্বীরা। প্রতি বছর মমতা নিজে উপস্থিত থাকেন সেখানে। এ বার অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি। বদলে নিজের প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছিলেন শহরের মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অপর মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। দু’জনেই দুপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন শহিদ মিনার ময়দানের অনুষ্ঠানস্থলে। বিকেলে সেখানে হাজির হন অভিষেক-ঘরনি রুজিরা।
অভিষেকের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে অনেকটাই বাঙালি রুজিরা। পরিষ্কার বাংলায় কথা বলেন। বাঙালি মায়েদের মতোই ছেলেমেয়েকে কাছছাড়া করতে চান না। এমনকি, এক বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ডাকে শিশুপুত্রকে কোলে নিয়েই হাজির হয়েছিলেন তাদের দফতরে। আবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় তাঁকে দেখা গিয়েছে ছেলেমেয়েকে নিয়ে পরিবারের সকলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দিতে।
এই সে দিনও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় যোগ দিয়েছিলেন রুজিরা। পুজোয় যজ্ঞে বসেছিলেন অভিষেক। সেই পুজোর ভোগ রান্না করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। রুজিরাও ছিলেন সেখানে। আর সোমবার তাঁকে পাওয়া গেল পুরোদস্তুর লঙ্গরসেবকের ভূমিকায়। মাথা ওড়নায় ঢেকে সালোয়ার-কামিজ পরে পর পর নিখুঁত লুচি বেললেন অভিষেকের স্ত্রী। তবে রুজিরা যে নিয়মিত পুজো করেন, তা এর আগে এক বার সর্বসমক্ষে বলেছিলেন মমতাই। ভবানীপুরের গুরুদ্বারে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘‘রুজিরা এখানে নিয়মিত আসে। সকালে এসে পুজো দেয়।’’
সোমবারের লঙ্গরসেবায় রুজিরার সঙ্গে ছিল তাঁর এবং অভিষেকের দুই সন্তান আয়াংশ এবং আজানিয়া। আয়াংশ এখনও অনেকটাই ছোট। মেয়ে আজানিয়া বড়। বেলন হাতে ব্যস্ত মায়ের পাশে বসে অভিষেক-তনয়া আজানিয়াকেও দেখা গেল ছোট ছোট হাতে লুচির লেচি পাকাতে।