Sandeshkhali Incident

সরকারি টাকা নয়ছয় থেকে যৌন হেনস্থা! শাহজাহানের ভাই আলমগিরের নামে ইডির কাছে বয়ান সাক্ষীদের

১ এপ্রিল এক ব্যক্তি ইডির আধিকারিকদের কাছে শাহজাহানের ভাই আলমগিরের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগও তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতেই তোলা আদায়, হুমকি, ডাকাতি করতেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৪
Share:

(বাঁ দিকে) শাহজাহান শেখ। আলমগির। — ফাইল চিত্র।

সরকারি টাকা নয়ছয় করেছেন! মহিলাদের যৌন হেনস্থা করেছেন! শাহজাহান শেখের ভাই শেখ আলমগির, সঙ্গী শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে এই অভিযোগই তুলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সন্দেশখালিতে ভেড়ি দখল, ভয় দেখানোর অভিযোগের তদন্তে নেমে স্থানীয়দের বয়ান সংগ্রহ করেছেন ইডি আধিকারিকেরা। সেই বয়ানের ভিত্তিতেই ইডির বিশেষ আদালত এই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদিও নিরাপত্তার স্বার্থেই আদালতে সাক্ষীদের নাম প্রকাশ করেনি ইডি।

Advertisement

শুক্রবার ইডির বিশেষ আদালতে শাহজাহানের ভাই আলমগির, সঙ্গী শিবপ্রসাদ হাজরা এবং কর্মী দিদার মোল্লাকে আদালতে হাজির করানো হয়। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত তাঁদের ইডির হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। আদালতে ইডি দাবি করেছে, জমি দখলের টাকা পাচার করতে শাহজাহানের সংস্থা থেকে কোটি কোটি টাকা গিয়েছে আলমগির, শিবু এবং দিদারের অ্যাকাউন্টে। কী ভাবে সেই টাকা আয় করেছেন আলমগিরেরা, তা জানতে সন্দেশখালির বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন ইডির আধিকারিকেরা। তাঁদের বয়ান আদালতে পেশ করা হলেও নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

৬ এপ্রিল সন্দেশখালির এক বাসিন্দা ইডিকে দেওয়া বয়ানে দাবি করেছেন, আলমগির এবং শিবু সরকারি টাকা নয়ছয় করেছেন। মহিলাদের অপহরণ করেছেন। মহিলা কর্মীদের যৌন হেনস্থা করতেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, আলমগির সব সময় বন্দুক নিয়ে ঘুরতেন। লোকজনকে হুমকি দিতেন। ২ এপ্রিল এক ব্যক্তি সাক্ষী দিয়ে ওই একই দাবি করেছেন। জানিয়েছেন, আলমগির সব সময় পকেটে বন্দুক নিয়ে ঘুরতেন। যখনই তাঁর দফতরে আসতেন, তখন বন্দুক নিয়ে আসতেন। শাহজাহানের নামে ভয় দেখিয়ে জমি কেড়ে নিতেন, তোলা আদায়, হুমকি এমনকি খুনও করতেন তাঁর ভাই। ১ এপ্রিল এক ব্যক্তি ইডির আধিকারিকদের কাছে শাহজাহানের ভাই আলমগিরের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগও তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতেই তোলা আদায়, হুমকি, ডাকাতি করতেন।

Advertisement

ইডি যে নথি আদালতে পেশ করেছে, তাতে ১২ মার্চ এক ব্যক্তির থেকে নেওয়া বয়ানও রয়েছে। ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, জমি হাতানোয় শাহজাহানের সঙ্গী ছিলেন আলমগির। ওর নামে ভয় দেখাতেন তিনি। খুন, টাকা ছিনতাইও করেছেন। ২ এপ্রিল বয়ান দিয়ে এক জন দাবি করেছেন, শিবুর যে গুন্ডাবাহিনী ছিল, তাঁরা ভয় দেখাতেন। শাহজাহানের ইটভাঁটা থেকে ইট নিতে হবে বলে জোরজার করতেন। ৬ এপ্রিল বয়ান দিয়ে স্থানী। এক জন দাবি করেছেন, নিরীহ মানুষের থেকে জমি ছিনিয়ে নিয়ে পোলট্রি খামার চালাতেন আলমগির এবং শিবু। মেয়েদের অপহরণ, ভুয়ো বিল দাখিলের অভিযোগও এনেছেন তিনি।

ইডি শুক্রবার আদালতে দাবি করেছে, শাহজাহানের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা এস কে সাবিনা, সাবিনা ফিশারিজ থেকে দু’কোটি এক লক্ষ টাকা পেয়েছেন আলমগির। টাকা পেয়েছেন দিদার এবং শিবুও। মাছ সরবরাহের নামে এই টাকা দেওয়া হলেও বাস্তবে একটা মাছও সরবরাহ করা হয়নি বলে আদালতে দাবি করেছে ইডি। তাদের দাবি, জমি দখলের টাকা পাচার করতে আলমগিরের অ্যাকাউন্ডে টাকা রাখা হয়েছে। ‘সাইফনিং’ করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, শাহজাহানের জমি, ভেড়ি দখলের তদন্তে নেমে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।

আদালতে ইডি আরও দাবি করেছে, এসকে সাবিনা ফিশারিজ থেকে দিদার পেয়েছেন সাত কোটি, ৭৪ লক্ষ টাকা ৫৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে দু’কোটির উপর টাকা নগদ তুলে নিয়েছেন তিনি। শিবপ্রসাদ হাজরা পেয়েছেন ৫০ লক্ষ টাকা। তবে ওঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় বিপুল পরিমাণ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, বিভিন্ন জনের বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, এই টাকার একটা অংশ অভিযুক্তেরা পেয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement