Shantanu Sen & TMC

শান্তনুকে সাসপেন্ড করার পরে তাঁর কাউন্সিলর স্ত্রী কাকলির সঙ্গেও দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল তৃণমূলের

দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, শান্তনুকে সাসপেন্ড করেই দলের মনোভাব সেন দম্পতির কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়ার পরে শান্তনু ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিবিধ প্রশ্নও তুলেছেন।

Advertisement

অমিত রায়

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ তথা চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনকে। তার পরেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তাঁর কাউন্সিলর স্ত্রী কাকলি সেনকে নিয়ে। শান্তনুর পর কি কাকলিকেও সাসপেন্ড করার পথে হাঁটবে তৃণমূল? কারণ, আরজি করের ঘটনা এবং তার পরবর্তী সময়ে শান্তনুর ‘ভূমিকা’ নিয়ে অসন্তুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের কাউন্সিলরদের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ থেকে কাকলিকে বাদ দিয়ে দিতে। তা এখনও বহাল আছে।

Advertisement

তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, এখনই সাসপেনশন নয়, আপাতত শান্তনুর স্ত্রী কাকলির (তিনিও পেশায় চিকিৎসক) সঙ্গে ‘নিরাপদ দূরত্ব’ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের অন্দরমহলে।

শুক্রবার শান্তনুর সাসপেনশন এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়ায় কাকলি বলেন, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি। তাঁর দেওয়া টিকিটেই কাউন্সিলর হয়েছি। তাই আমাকে দলের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে।’’ যদিও একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘তবে আমি আমার স্বামীর পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। তাঁর সঙ্গে থাকা মানে তো আর দলের বিরোধিতা করা নয়! আমার স্বামী সাসপেন্ড হয়েছেন। কিন্তু আমি তো দলেই রয়েছি। তাই দলের কাজ করে যাব।’’ কাকলি জানাচ্ছেন, শান্তনুর সাসপেনশনের পর দলের কোনও স্তরের কোনও নেতাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। সঙ্গে জানিয়েছেন, ছ’মাস কেটে গেলেও তাঁকে কাউন্সিলরদের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে ফেরাতে কেউ উদ্যোগী হননি।

Advertisement

দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, শান্তনুকে সাসপেন্ড করেই দলের মনোভাব সেন দম্পতির কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়ার পরে শান্তনু ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিবিধ প্রশ্নও তুলেছেন। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে (বিশেষত, বিরোধী শিবিরে) শোরগোল পড়েছে। কারণ, শান্তনু বলেছেন, তাঁকে ‘দলবিরোধী’ কাজের জন্য সাসপেন্ড করা হলেও কী দলবিরোধী কাজ তিনি করেছেন, তা তাঁকে বা প্রকাশ্যে জানানোই হয়নি! যেমন বলা হয়নি তাঁর সাসপেনশনের মেয়াদ কত দিন, সেই কথাও। বিরোধীদের একটি অংশ বিষয়টি নিয়ে ‘জলঘোলা’ করতে পারে বলেই আশঙ্কা শাসক শিবিরের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে আর নতুন বিতর্ক তৈরি করতে চাইছেন না দলীয় নেতৃত্ব। তাই তাঁকে সাসপেন্ড করার মতো সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া হচ্ছে না। তবে তাঁর কর্মকান্ডের উপর নজরদারি থাকবে। আপাতত কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের তাঁর সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বজায় রেখে চলতে বলা হয়েছে।

গত বছর ৯ অগস্ট মাসে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে উত্তাল হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। সেই সময়ে সরকারের সমালোচনা করে ১৪ অগস্ট যে ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচি হয়েছিল, তাতে অংশ নিয়েছিলেন চিকিৎসক সেন দম্পতি। তাঁদের একমাত্র কন্যাসন্তানকেও প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গিয়েছিল। কাকলির নিজের ওয়ার্ডে আয়োজিত রাত দখলের কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিল সেন পরিবার। পাশাপাশিই সেই ঘটনায় আরজি করের ভিতরের দুর্নীতি ইত্যাদির কথা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছিলেন শান্তনু। তখন তাঁকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কাকলিকে দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে তৈরি হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হয়। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশেই কাকলিকে ওই হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement