(বাঁ দিকে) আরাবুল ইসলাম। হাকিমুল ইসলাম (ডান দিকে) । —ফাইল চিত্র।
এ বার প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে আরাবুল ইসলাম এবং পুত্র হাকিমুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলেন তৃণমূল নেতারা। জানা গিয়েছে, বিজয়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাতে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক এবং তৃণমূল থেকে সদ্য সাসপেন্ড হওয়া আরাবুলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন ভাঙড়-১ ব্লকের বন এবং ভূমি কর্মাধ্যক্ষ আহছান মোল্লা। অভিযোগে নাম রয়েছে আরাবুলের ছেলে জেলা পরিষদের সদস্য হাকিমুলেরও।
দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে শুক্রবার আরাবুলকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। ঠিক তার আগের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তৃণমূলেরই একাংশের বিরুদ্ধে কোন্দলে জড়ান আরাবুল এবং তাঁর অনুগামীরা। আহছানের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ভাঙড়-২ বিডিও অফিসে জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত কাজে গেলে আরাবুল এবং হাকিমুলের মদতে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। তাতে তাঁর প্রাণও যেতে পারত।
আরাবুলের পুত্রের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েও ঘর পাননি আরাবুল। ভাঙড়-১ ব্লক থেকে কিছু বহিরাগত এসে তাঁর বাবাকে খারাপ কথা বলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার হাকিমুল জানিয়েছিলেন, ‘‘এখানে অশান্তি করার পরিকল্পনা করছে ওরা। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’
তৃণমূল বিধায়ক তথা ভাঙড়ের দলীয় পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ খইরুল ইসলাম জানান, তাঁরা যখন পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকছিলেন, তখন প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘আরাবুল ইসলাম একজন খুনি। আরাবুল এবং হাকিমুল মিলে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে।’’ শওকতের ঘনিষ্ঠ আর এক তৃণমুল নেতা ভাঙড়-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আহসান মোল্লা জানান দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে তিনি ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে ঢুকছিলেন। তখন তাঁকে গালাগালি করা হয়। তাঁর দিকে তেড়ে যান আরাবুল এবং তাঁর অনুগামীরা। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন পুলিশ না থাকলে আমায় প্রাণে মেরে ফেলা হত।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, সে দিনের ঘটনায় আরাবুলের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট করেন ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকত। তিনি নাকি এ-ও জানান, আরাবুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে তাঁকে যেন ভাঙড়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শোনা যাচ্ছে, তার পরেই ‘তাজা নেতা’র সাসপেনশন নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবারের গন্ডগোলের ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছিল। তবে নতুন করে আরাবুল-সহ ১০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল নেতারা।
অন্য দিকে, সাসপেনশনের পর থেকে মুখে কুলুপ আরাবুলের। তাঁদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের নিয়ে আরাবুল বা তাঁর পুত্র— কেউই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।