জেলাভিত্তিক দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে এ বার নিয়মিত রিপোর্ট চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি সংগঠনে একাধিক রদবদল করেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। জেলা চেয়ারম্যান থেকে সভাপতি পদে বদল আনা হয়েছে। কিন্তু জেলাভিত্তিক দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে এ বার নিয়মিত রিপোর্ট চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শীর্ষ নেতৃত্বের ‘নির্দেশ’ বুথ স্তর থেকে জেলা সংগঠন পর্যন্ত সঠিক ভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা এই রিপোর্টের মাধ্যমে যাচাই করে নিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। ১ অগস্ট দলীয় সংগঠনে কিছু রদবদল করেছে তৃণমূল। তাতে দেখা গিয়েছে, ৩৫টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করা হয়। বেশ কিছু নতুন মুখ যেমন উঠে এসেছেন, তেমনই বর্ষীয়ান নেতৃত্বকেও রাখা হয়েছে কমিটিতে। নতুন ও পুরনোর মেলবন্ধনে জেলা কমিটি কী ভাবে কাজ করছে, তা এই রিপোর্টের মাধ্যমে উঠে আসবে বলেই মত তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই দু’সপ্তাহ অন্তর জেলা কমিটিকে বৈঠক করে সেই রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে ৭৭ হাজার আসনে প্রার্থী দিতে হবে তৃণমূলকে। তাই সংগঠন পরিচালনার পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী অন্বেষণের কাজ খানিকটা এগিয়ে রাখতেই অভিষেক এমন কৌশল নিয়েছেন বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানকে একযোগে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। যাতে জেলা কমিটির মধ্যে কোনও বিভাজন বা দ্বন্দ্ব না থাকে। আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই জেলা ধরে সাংগঠনিক বৈঠক শুরু করেছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। প্রত্যেক জেলা কমিটির কাছ থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল সাজাতে চান অভিষেক। তাই দু’সপ্তাহ অন্তর রিপোর্ট তলব করা হচ্ছে বলেই মত তৃণমূলের এক জেলা সভাপতির।
ইতিমধ্যে নিজের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অভিষেক। সেখানে ঘোষিত ব্লক কমিটিগুলিকে ১৫ দিন অন্তর বৈঠক করতে বলছেন তিনি। প্রতি দু’সপ্তাহ অন্তর সংগঠন কতটা এগোল বা কতটা খামতি রয়েছে তা বিশ্লেষণ করতেই এই বৈঠক। ব্লক কমিটিগুলির ওপর নজরদারির দায়িত্ব জেলা কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাংলার রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, মুখে অভিষেক সংগঠনকে বুথ স্তর থেকে শক্তিশালী করতে হবে বলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা বললেও, তাঁর মূল লক্ষ্য আগামী লোকসভার ভোট। ২০১৯ সালে যে ধাক্কা রাজ্যের শাসক দল খেয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।