ফের মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
দিলীপ আছেন দিলীপেই!
কেন্দ্র সিবিআই নিয়ে তাঁর মন্তব্যের অনুবাদ চেয়ে পাঠিয়েছে বাংলার বিজেপি নেতৃত্বের কাছ। বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বও বেশ ‘অস্বস্তি’তে। তবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি যে সেই ‘অস্বস্তি’ বা জবাব তলবের বিন্দুমাত্র পরোয়া করেন না, তা মঙ্গলবার আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ। মঙ্গলবার প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিচার না পেলে বলতে পারব না? কার সিবিআই দেখার দরকার নেই। পাবলিকের টাকায় চলছে আমাদের দেশের একটা সংস্থা। তাদের উপর আমার ভরসা আছে। যখন ভরসা থাকে না তখনই প্রশ্ন তুলি।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার সিবিআইকে পরোক্ষে রাজ্য সরকারের ‘পোষ মানা কুকুর’ বলে ইঙ্গিত করেছিলেন দিলীপ। পাশাপাশি প্রশংসা করেছিলেন কেন্দ্রীয় আর্থিক নিয়ামক সংস্থা ইডির। বিজেপি নেতা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন, সিবিআইয়ের আধিকারিকদের একাংশ কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে যায়। তৃণমূলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে তাঁদের ‘সেটিং’ রয়েছে। কিন্তু ইডির উপর তাঁর ভরসা আছে। কারণ তারা বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করেছে। দিলীপের এই বক্তব্যেরই হিন্দি এবং ইংরেজি অনুবাদ চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কারণ দিলীপ যে সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আক্রমণ করছেন, সেই সিবিআই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পার্সোনেল’ (কর্মিবর্গ) মন্ত্রকের আওতাভুক্ত। অন্য দিকে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও একই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য বিজেপির কাছে।
মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির মধ্যেই প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনো দিলীপের কাছে কেন্দ্র এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রিপোর্ট চেয়ে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। জানানো হয়েছিল রাজ্য নেতৃত্বের ‘অস্বস্তি’র কথাও। তারই প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসায় ৬০ জন মারা গিয়েছেন। কাউকে বিচার দিতে পেরেছি? কত জন বিজেপি কর্মীর পরিবারকে সুবিচার দিতে পেরেছি? এই প্রশ্ন তুললে যদি কারও খারাপ লাগে, লাগতেই পারে। কিন্তু আমরা কাউকে খুশি করার জন্য রাজনীতি করছি না। আমরা বাংলার সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্য রাজনীতি করছি। কোর্টে গিয়েছিলাম। সিবিআই চেয়েছিলাম। সিবিআই যদি না করে সেই কাজ, তবে আমরা বলব না?’’
উল্লেখ্য, গত রবিবার এবং সোমবার পর পর দু’দিন সিবিআইকে আক্রমণ করে মন্তব্য করেন দিলীপ। রাজ্যে এখন বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। দিলীপ খাস কেন্দ্রীয় সরকারের মঞ্চে দাঁড়িয়েই বলেছিলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত হলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। গত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় সিবিআইয়ের সঙ্গে সেটিং চলছে। সিবিআইয়ের কোনও কোনও আধিকারিক কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন।’’ দিলীপ এ কথাও বলেছিলেন যে, ‘‘সিবিআইয়ের একটি অংশের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ‘সেটিং’ হয়ে গিয়েছিল বুঝতে পেরেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক।” তার পর থেকে এ নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা চলছে। বিতর্ক থেমেও থামছে না।