রবিবার কাটোয়া আদালতে হাজির করানো হলে অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। —প্রতীকী চিত্র।
কে কত উচ্চগ্রামে গান বাজাতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলছিল গ্রামে। দুই পুজো কমিটির ডিজে বাজানোর তাণ্ডবে পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে হামলার মুখে পড়লেন কয়েক জন গ্রামবাসী। আবার অভিযোগ পাওয়ার পর মোট আট জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কাটোয়ার গাঁফুলিয়ায় পুজো উপলক্ষে গত চারদিন ধরে তারস্বরে ডিজে বাজাচ্ছিল দুই পুজো কমিটি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শব্দ-যন্ত্রণায় নাজেহাল দশা হয় গ্রামবাসীদের। কয়েক জন পুলিশের দ্বারস্থ হন। শনিবার রাতে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পুজো কমিটির গানবাজনা বন্ধ করে দিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ, তার পরেই অভিযোগকারী পরিবারগুলির উপর আক্রমণ শুরু করেন কয়েক জন যুবক। বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি বাসিন্দাদের শাসানি দেন তাঁরা। লোকজনদের শাসিয়ে আসে হামলাকারীরা। এ জন্য হারাধন মুখোপাধ্যায় নামে গ্রামের এক বাসিন্দা পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে কার্তিক সর্দার, মিঠুন মাজি, অনুপ মাজি, সুকুমার সর্দার, নিতাই সর্দার, নকুল দলুই, মিলন মাজি এবং রাজু মাজিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই স্থানীয় বাসিন্দা। রবিবার কাটোয়া আদালতে হাজির করানো হলে ধৃত মিলনকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বাকিদের সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর ধুমধাম করে গ্রাম্যদেবতার পুজো হয়। পুজো উপলক্ষে একাধিক পুজো কমিটি ডিজে ভাড়া করে নিয়ে যায়। বুধবার থেকে টানা ডিজে বাজছিল গ্রামে। পুজো শেষ হয়ে চার দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু উচ্চগ্রামে ডিজে বাজানোয় কোনও বিরাম ছিল না। অভিযোগকারী হারাধন বলেন, ‘‘আমাদের পাড়ায় পাশাপাশি দুটি পুজো কমিটির ডিজে বাজানোর কারণে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। পুলিশ ডিজে বন্ধ করে দিয়ে গেলেও গ্রামের কয়েক জন যুবক দাবি করে, আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। সে জন্য আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় ওরা। ভাঙচুর করে বাড়িঘর।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি এমনিতেই অসুস্থ। ডিজে বাজানোর দাপটে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি।’’
আক্রান্তদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার পর মুখে কুলুপ পুজো কমিটিগুলির।