অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। নিউ টাউনের রেস্তরাঁ-মালিককে মারধরের ঘটনায় বারাসত আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন সোহম। আগাম জামিনের আবেদনও করেছিলেন। আদালত দু’হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে।
রেস্তরাঁ-মালিককে মারধর করার কথা আগে স্বীকার করে নিয়েছিলেন সোহম। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে রেস্তরাঁ-মালিক আনিসুল আলম বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। মামলার শুনানির সম্ভাবনা শুক্রবার। তার আগে বৃহস্পতিবারই বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান সোহম। নিজে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর এই তৎপরতা দেখে অনেকের প্রশ্ন, তবে কি রেস্তরাঁ-মালিককে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতারির আশঙ্কা করেছিলেন চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক? সেই কারণেই কি হাই কোর্টে মামলার শুনানির আগে তড়িঘড়ি বারাসত আদালতে গিয়ে আগাম জামিন চাইলেন?
বিতর্কের সূত্রপাত গত শুক্রবার নিউ টাউনের রেস্তরাঁয়। সেখানকার একটি ফ্লোরে শুটিং করছিলেন সোহম। সেই সময়ই রেস্তরাঁর সামনে শুটিং ইউনিটের গাড়ি রাখা নিয়ে অভিনেতার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বচসা বাধে ওই রেস্তরাঁর মালিক আনিসুলের। তাঁর অভিযোগ, একটি পার্কিং খালি করতে বললে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর উপর চড়াও হন। আরও অভিযোগ, এর পর সোহমও তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে ঘুষি মারা হয়। এমনকি, সোহম তাঁকে সজোরে লাথি মারেন বলেও অভিযোগ আনিসুলের।
রেস্তরাঁর মালিককে মারধরের কথা স্বীকার করে নেন সোহম। তিনি জানিয়েছিলেন, ওই রেস্তরাঁর মালিক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কটু কথা বলছিলেন। সেই কারণেই তিনি তাঁকে মারধর করেছেন। রেস্তরাঁয় মারধরের সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে সোহমকে মারধর করতে দেখা গিয়েছে। সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। আনিসুলের অভিযোগ, পুলিশে অভিযোগ দায়ের সত্ত্বেও সোহমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, অভিনেতা তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হলে সোহম অবশ্য ক্ষমা চেয়ে নেন। তবে রেস্তরাঁ-মালিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। শুক্রবার হাই কোর্টে সেই মামলার শুনানি হওয়ার আগেই নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন পেলেন সোহম।
বারাসত আদালতে আগাম জামিন চাইতে গিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছেন সোহম। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করার পর দীর্ঘ ক্ষণ সরকারি আইনজীবীর জন্য (পিপি) নির্ধারিত ঘরে বসে অপেক্ষা করেন। এক জন অভিযুক্ত আদালত কক্ষে না বসে কেন সরকারি আইনজীবীদের বরাদ্দ ঘরে বসেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীদেরই একাংশ। বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকেও প্রশ্ন তোলা হয়। ঘণ্টা দুয়েক ওই ঘরে বসে থাকার পর অবশ্য সেখান থেকে বেরিয়ে যান সোহম।