মাথা-গুঁজে: এ ভাবেই কোনও মতে আছেন মমতারা। নিজস্ব চিত্র।
আমপানের ধাক্কায় এখনও ছন্দে ফিরতে পারেননি অনেকে। ফের ইয়াসের আগমন বার্তায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রূপমারি পঞ্চায়েতের বাইনারা গ্রামের ডাঁসা নদীর বাঁধের পাশের বাসিন্দারা। তাঁরা জানালেন, আমপানে অনেকের মাটির বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। সর্বস্ব হারিয়ে ডাঁসা নদীর বাঁধেই ছোট ঝুপড়ি তৈরি করে বাস করছেন কেউ কেউ।
এই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল বাঁধের পাশে একটা ঝুপড়ির সামনে বসে আছেন মমতা সর্দার ও তার মেয়ে বর্ষা। মুখ ভার মমতার। তিনি বলেন, “আমপানে মাটির বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এখানেই ঝুপড়িতে কোনও রকমে দিন কাটাচ্ছি। ইয়াস আসলে প্রাণ বাঁচাতে প্রশাসন যেখানে নিয়ে যাবে সেখানেই যাব।”
স্থানীয় বাসিন্দা সুসেন সর্দারও তাঁর পরিবার নিয়ে বাঁধের পাশে খড়ের ছাউনি দেওয়া ঝুপড়ি বানিয়ে আছেন। সুসেন জানালেন, সরকারের দেওয়া পাকা ঘর আমপানের পরে দীর্ঘ দিন নদীর জলে ডুবে ছিল। এখন বাড়ির দেওয়ালে বিপজ্জনক ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, “বাড়ির দরকারি জিনিস, গবাদি পশু ফেলে অন্যত্র যেতে মন চায় না কারওরই। কিন্তু যে অবস্থায় আছি তাতে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবেই। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ে চিন্তায় আছি।”
বাইনারা গ্রামের কেউড়াতলি পাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমপানে। তাঁরা মাসের পর মাস বাঁধের উপরেই ছিলেন। তাঁরা জানান, আমপানের ক্ষত এখনও টাটকা। এলাকার গরিব মানুষ একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন। ফের ইয়াস এলে কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সকলে।
তাঁদের মধ্যে স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমপানের আগে আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল এই এলাকায় বিপর্যয় হবে না। তাই বাঁধের পাশে বাড়ি হলেও কেউ নিরাপদ আশ্রয়ে যাননি। কিন্তু এইবার সেই ভুল আর করব না।”
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা বলেন, “এ বার বিপজ্জনক জায়গা বা মাটির বাড়ি থেকে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে বুথভিত্তিক দল গঠন করা হচ্ছে। কেউ যেতে না চাইলে জোর করে সরিয়ে আনা হবে।”