মাঠ ভরা এমন সর্ষের ফলন বাড়াচ্ছে মধু উৎপাদন। নিজস্ব চিত্র ।
গত কয়েক দিন ধরে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মধুর উৎপাদনে। মধু ব্যবসায়ীদের দাবি, লম্বা সময় ধরে ভাল ঠান্ডা থাকায় এ বার মধুর উৎপাদন ভাল হয়েছে।
সুন্দরবনে জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহের পাশাপাশি, বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে মৌমাছি পালনে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষ বাক্সে মৌমাছি পালন করে আয় করছেন অনেকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝড়খালি, কুলতলিতে বন দফতরের সহযোগিতায় মৌমাছি পালন হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, শীতকালে মূলত সর্ষে ফুলের মধু মেলে। এ বার ঠিক মত ঠান্ডা পড়ায় ফুলের চাষ ভাল হয়েছে। তার জেরে বেড়েছে মধুর উৎপাদন। শুধু কুলতলি এলাকাতেই এ বার হাজারখানেক বাক্স বসানো হয়েছিল। তা থেকে ইতিমধ্যে ২০০ কুইন্টাল মধু মিলেছে। আরও মধু মিলবে বলে আশাবাদী চাষিরা। মৌচাষি দীপক মণ্ডল জানান, এই মরসুমে ভাল মধু মিলেছে। মাঝে কিছু দিন আবহাওয়া খারাপ না হলে আরও উৎপাদন হত।
মধু সংগ্রহের পরে তা পাঠানো হয় বনফুল অ্যাগ্রো প্রডিউসার কোম্পানিতে। সেখানেই মধুকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাচের বোতলে ভরে করে বাজারজাত করা হয়। কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রলয় সামন্ত বলেন, “শীতে সর্ষের মধু ভাল পাওয়া যায়। এ বার ইতিমধ্যেই ২০০ কুইন্টালের বেশি মধু মিলেছে। আরও মধু মিলবে বলে আমরা আশাবাদী।”
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ১, ২, দেগঙ্গা, আমডাঙা, হাড়োয়া ব্লকেও কয়েক হাজার চাষি মৌমাছি পালন করেন। চাষিরা জানান, ঠান্ডা ভাল থাকায় সর্ষে ফুলের ফলন ভাল হয়েছে। বেড়েছে মধুর উৎপাদনও। দেগঙ্গার চাষি জয়নাব মণ্ডল, রাকিবুল ইসলামেরা জানান, টানা ঠান্ডা থাকায় ফুল বেশি সময় ধরে গাছে আছে। ফলে মধু বেশি মিলছে। অল্প সময়ে বড় হয়েছে চাক।
চাষিরা জানান, সর্ষে খেতে মেড়ো নামের এক ধরনের পোকা হয়। সেই পোকার দাপাদাপিতে মৌমাছিরা সর্ষে খেতে ঘুরতে পারে না। প্রভাব পড়ে মধু উৎপাদনে। কিন্তু চড়া ঠান্ডায় মেড়ো পোকার উপদ্রব কমেছে। মধু ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মরসুমে মধুর চাহিদাও বেড়েছে। সেই অনুযায়ী জোগান ছিল পর্যাপ্ত। সব মিলিয়ে আয় হয়েছে বেশি।