Online Class

অনলাইন ক্লাস করার জন্য পড়ুয়াদের টাকা দিল সংগঠন

জানা যায় পম্পার বাবা তামিলনাড়ু থেকে কাজ হারিয়ে বাড়ি এসে বসে আছেন। সংসার চলছে না।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪৮
Share:

প্রতীকী চিত্র। 

আমপানে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের অনেক পরিবারেরই এখন কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে অনলাইনে ক্লাস চালু হলেও অনেক ছাত্র অংশ নিতে পারছে না। কারণ, অনেকেরই স্মার্ট ফোন নেই। কারও আবার স্মার্ট ফোন থাকলেও নেট ভরার সামর্থ্য নেই। এই পরিস্থিতিতে হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির ১২০ জন পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এক হাজার টাকা করে পাঠাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার 'তেপান্তরের স্বপ্ন' নামে একটি সংগঠন।

Advertisement

ইতিমধ্যে প্রায় ৭৫ জন পড়ুয়ার কাছে আর্থিক সাহায্য এসে পৌঁছেছে। অন্যরাও দ্রুত সাহায্য পাবে বলে দাবি ওই সংস্থার। এই সাহায্য পেয়ে অনেক দুঃস্থ পরিবারের পড়ুয়ারা এখন অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারছে।

স্কুল সূত্রের খবর, এই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী জাহানারা খাতুন শ্রমিক পরিবারের মেয়ে, সান্ডেলেরবিল এলাকার বাসিন্দা। রাস্তার পাশে একটা ঝুপড়িতে থাকে জাহানারারা। তার বাবার এখন কাজ নেই। সংসার চালাতে মায়ের সঙ্গে জাহানারাও বিড়ি বাঁধে। তাঁদের একটি স্মার্ট ফোন থাকলেও তাতে এখন নেট ভরার মতো ক্ষমতা নেই। তাই স্কুলে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে জেনেও অংশ নিতে পারেনি সে। শুধু জাহানারাই নয়, এই স্কুলের দশম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া পম্পা মণ্ডলের একই অবস্থা। স্মার্ট ফোন থাকলেও স্কুলের অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছিল না তাকে। ফোনেও যোগাযোগ করতে পারছিলেন না স্কুলের শিক্ষকরা। এরপর জানা যায় পম্পার বাবা তামিলনাড়ু থেকে কাজ হারিয়ে বাড়ি এসে বসে আছেন। সংসার চলছে না। তাই ফোন রিচার্জ করতে পারেনি। এখন হাজার টাকা পাওয়ার পর পম্পা অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে।

Advertisement

একই অবস্থা সন্দীপ চক্রবর্তী নামে আর এক ছাত্রেরও। সন্দীপ বলে, “আমরা সরকারি আর্থিক সুবিধা পাই না। বাড়ির অবস্থা একেবারেই ভাল না। তাই ফোন রিচার্জ করতে পারছিলাম না। খুব ভাল হল টাকাটা পেয়ে।”

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী বলেন, “আমপান বিধ্বস্ত হিঙ্গলগঞ্জের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এই পড়ুয়ারা এ ভাবে সরাসরি আর্থিক সাহায্য পাওয়ায় খুব উপকৃত হল। আশা করছি, এই টাকায় বেশ কয়েক মাস ইন্টারনেট পরিষেবা পাবে পড়ুয়ারা। এই পরিস্থিতিতে ওদের এটা খুব প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া এই টাকা পড়ুয়ারা অন্য প্রয়োজনীয় কাজেও ব্যাবহার করতে পারছে।”

এ বিষয়ে 'তেপান্তরের স্বপ্ন' সংগঠনের সম্পাদক জ্যোতিরিন্দ্র নারায়ণ লাহিড়ি বলেন, “আমরা আরও কিছু মানুষের কাছে আমপানের পর সরাসরি আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিয়েছিলাম। যা দেখে আমেরিকায় পড়াশোনা করতে যাওয়া কিছু পড়ুয়া আমাদের জন্য ওই দেশ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা পাঠান। সেই টাকা এই পড়ুয়াদের দেওয়া হল।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement