তখন ফুঁসছে নদী, তৎপরপরতার সঙ্গে বাঁঝধ মেরামতি। নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপকূলবর্তী এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে সরানো হল নিরাপদ স্থানে। সেই সঙ্গে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জারি বাঁধ মেরামতিও। জোয়ারে জলস্ফীতির কারণে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ উপচে জল ঢুকেছিল। সেই সব এলাকায় বাঁধ মেরামতিও হয়েছে দ্রুতগতিতে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই হাওয়ার তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার মানুষদের ফ্লাড সেন্টার অথবা নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ চলছিল। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত জলমগ্ন এবং উপকূল এলাকা থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে সরানো হয়েছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতি। নিজস্ব চিত্র।
বকখালি এবং সাগরের মত পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি হোটেল, লজ। মঙ্গলবার জেলাশাসক পি. উলগানাথন ফ্রেজারগঞ্জের লক্ষীপুরে ফ্রেজার সাহেবের বাংলো লাগোয়া সমুদ্রে বাঁধ পরিদর্শন করেন। ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডলও। দিলীপ মন্ডল বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেছি। দ্রুত গতিতে কাজ চলছে সব জায়গায়। বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও জরুরি সব বিভাগ প্রস্তুত আছে। আশা করি, এই ঝড় আমরা মোকাবিলা করতে পারব।’’
মঙ্গলবার সকালে নামখানার উপকূলবর্তী লক্ষ্মীপুর, অমরাবতী, হাতিকর্নার, দাসকর্নার, মদনগঞ্জ এবং কালিস্তান এলাকায় বাঁধ উপচে নোনাজলে প্লাবিত হয় একের পর এক গ্রাম। জোয়ারের জলস্ফীতির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মত স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভাঙন কবলিত মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়াতে চিনাই নদীর বাঁধে বড়সড় ফাটল দেয়। প্রথমে সেই ফাটল দিয়ে এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করে৷ পরে জোয়ার আসায় বাঁধ উপচে ব্যাপক হারে নোনা জল ঢুকে পড়ে এলাকায়। নদীতে জল জলস্ফীতির কারণে প্লাবিত হয় সাগরদ্বীপের মুড়িগঙ্গা, বোটখালি এবং সুমতিনগরের কিছু এলাকা। একই ছবি দেখা গিয়েছে ঘোড়ামারা দ্বীপের মন্দিরতলা এবং খাসিমারায়। রায়দিঘির দমকল এলাকায় ঠাকুরান নদীর বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বাসন্তীর বিদ্যা নদী এবং ক্যানিংয়ের মাতলা নদীতেও জলস্ফীতির কারণে একই ঘটনা ঘটে। তবে প্রত্যেক জায়গাতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতির কাজ হয়।