মৃত কানাই গিরি। নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের অভিঘাতে বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘোড়ামারা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণিতে মৃত্যু হল দুই ব্যক্তির। দুর্যোগের সময় ঘোড়ামারায় একটি শিশুও নিখোঁজ হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা দ্বীপে মৃত ব্যক্তির নাম বৃন্দাবন জানা। নিখোঁজ শিশুর নাম আতাউল্লা গায়েন। কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বুধবার বিকেলে বলেন, ‘‘এই ঘটনার খবর পেয়েছি। কিন্তু নদী ও সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ থাকায় দ্বীপের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। দ্রুত প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এনডিআরএফ কর্মীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’’ যদিও ঘোড়ামারায় কোনও মৃত্যু এবং নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
মুড়িগঙ্গায় জলস্ফীতির জেরে বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে উপকূলের ভাঙন কবলিত দ্বীপ ঘোড়ামারার। গোটার দ্বীপটা কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের অনেককেই সরিয়ে আনা হলেও কিছু গ্রামবাসী দ্বীপেই ছিলেন। কিন্তু ক্রমশ জলস্তর বাড়তে থাকায় তাঁদেরকে দ্বীপেরই সরকারি স্কুল ও ফ্লাড সেন্টারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ফ্লাড সেন্টারে থাকা স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃন্দাবন দুপুরে নিজের বাড়ির কী অবস্থা তা দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করলে স্রোতের মুখে পড়ে যান বৃন্দাবন। বিকেলে জল কিছুটা নামলে স্থানীয় একটি পান বরজে তাঁন দেহ আটকে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে, দ্বীপের বাসিন্দা এক মহিলার তাঁর শিশু আতাউল্লাকে ফ্লাড সেন্টারে যাওয়ার সময় আচমকা স্রোত টেনে নিয়ে যায় তাকে।
ঘূর্ণঝড়ের সময় মাছ ধরতে গিয়েই মন্দারমণি উপকুল থানার দক্ষিণ কান্দি গ্রামের বাসিন্দা কানাই গিরি (৫৫)-র মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ওই এলাকায় আরও এক মৎস্যজীবী জলে তলিয়ে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের আগাম সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বুধবার সমূদ্র তীরবর্তী এলাকায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কানাই ও তাঁর কয়েকজন সঙ্গী। আচমকা জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা ডুবে যান। এই সময় কয়েকজন সাঁতরে পাড়ে এলেও কানাই তলিয়ে যান। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মান্দারমণি উপকূল থানার এক পুলিশ আধিকারিকের বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, মাছ ধরতে গিয়ে আচমকাই তলিয়ে যান কানাই গিরি। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে মোট ৪ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু মাছের ভেড়ি নষ্ট হয়েছে। তাতে বিপুল টাকা ক্ষতি হয়েছে। হলদি, হুগলি এবং রূপনায়ারণের জল ঢুকেছে জেলার বহু এলাকাতেই।