ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জারি হওয়ার পর পেরিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা আসেনি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ফলে মঙ্গলবারও জেলা প্রশাসন সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের খাদ্য উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছে দিতে পারেনি।
ওই বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘আমারা প্রাথমিক ভাবে প্রস্তুত রয়েছি। ওই খাদ্যবিলির সমস্ত ব্যবস্থা তৈরি রাখা হয়েছে। কিন্তু মাথা পিছু ২ কেজি চাল ও আলু কতদিনের জন্য ধার্য করা হয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা না পাওয়ায় সঠিক হিসেব করা যাচ্ছে না। সেই কারণেই খাদ্য বিলি করা সম্ভব হয়নি।’’ ওই নির্দেশিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে উপভোক্তাদের কাছে খাদ্য বিলি করা হবে বলে তিনি জানান। জেলাশাসকের আশ্বাস, আজ, বুধবার উপভোক্তাদের হাতে বরাদ্দ খাদ্য তুলে দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাঁচটি মহকুমায় অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রগুলি থেকে উপভোক্তাদের ওই খাবার বিলি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মাথাপিছু বরাদ্দ খাদ্য এক সঙ্গে উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেই মতো অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের কর্মীদের প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বড় অংশ সুন্দরবন। সে ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের কাছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য পৌঁছতে সময় লাগবে। সেই কারণে অঙ্গনওয়াড়ি উপভোক্তাদের উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হবে। অঙ্গনওয়াড়ি থেকেই এককালীন ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মাথাপিছু বরাদ্দ খাদ্য উপভোক্তার হাতে তুলে দেওয়া হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে তাঁদের অভিভাবকদের হাতে ওই খাদ্য তুলে দেওয়া হবে।’’
তবে এ ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের তেমন অসুবিধা হওয়ার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রসূতি ও শিশুদের পুষ্টিকর খাবারের জন্য বাড়ি বাড়ি চাল ও আলু জরুরি ভিত্তিতে উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বহু শিশু রয়েছে যারা অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। অনেক পরিবার আছে যাদের দু’বেলা পুষ্টিকর খাবার জোটে না।
ওই সব উপভোক্তারা অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের দেওয়া পুষ্টিকর খাবারের উপর নির্ভরশীল। ওই বিষয় মাথায় রেখে খাবার বিলি বন্টন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে উপভোক্তাদের বাড়িতে একসঙ্গে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা সমস্যা মাথাচাড়া দিতে পারে বলে মনে করছেন উপভোক্তাদেরই একাংশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকায় বহু উপভোক্তা খুবই দুঃস্থ।সেক্ষেত্রে শিশু ও প্রসূতির খাবার বাড়ির অন্যরা খেয়ে ফেলেন। সেক্ষেত্রে উপভোক্তার কপালে খাবার জোটে না। বছর পাঁচেক আগে অবশ্য উপভোক্তাদের বাড়িতে জেলা প্রশাসনের তরফে খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু জানা গিয়েছিল, পরিবারের অন্যরা উপভোক্তাদের খাবার খেয়ে নেন। কিন্তু এ বিষয়ে জেলার কর্তারা জানান, তাঁরা এ বিষয়ে নজর রাখবেন।
(তথ্য সহায়তা: দিলীপ নস্কর ও সামসুল হুদা)