ব্যারাকপুরের এই বাড়িতেই ঘটে বিস্ফোরণ। —নিজস্ব চিত্র।
ভর দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বাড়ি। চাঙড় ভেঙে জখম হলেন দু’জন। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের কালিয়া নিবাস এলাকায়। পুলিশ ওই কাণ্ডে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। আহত দু’জনকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। এমন বিস্ফোরণ ঘিরে ঘনিয়েছে রহস্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ব্যারাকপুরের কালিয়া নিবাস এলাকার একটি বাড়িতে আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে। তার জেরে বাড়িটির দু’টি ঘরে আগুন লেগে যায়। ওই ঘটনায় বাড়িটির চাঙড় ভেঙে দু’জন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে ব্যারাকপুরের বিএন বোস মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ইসাইয়া ফেনিহাস গিডলা (৫৪) নামে তেলুগু ভাষী এক প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কী কারণে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
বারাকপুর পুরসভার মুখ্য পুর প্রশাসক উত্তম দাস বলেন, ‘‘এই বাড়িতে তিন জন ভাড়াটে থাকেন। এদের মধ্যে রয়েছেন এক অবাঙালিও। আজ তাঁর ঘরেই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। সকলে প্রাথমিক ভাবে ভেবেছিলেন গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায় গ্যাস সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। বিস্ফোরণের জেরে দু’জন জখম হয়েছেন। যাঁর ঘরে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানে কিছুটা গাঁজা পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু রাসায়নিকও উদ্ধার হয়েছে। ওই ঘরে যিনি ভাড়াটে ছিলেন তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত হায়দরাবাদের বাসিন্দা। তিনি তেলুগুভাষী হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে তাঁকে জেরা করতে গিয়ে অসুবিধার মুখে পড়েন তদন্তকারীরা। এর পর টিটাগড় থানার পুলিশ আর এক জন তেলুগুভাষীকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছেন, বুধবার ঘরের মধ্যে তিনি নিজেই গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বার করে বিস্ফোরণ ঘটান। তবে কী কারণে তিনি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। পুলিশ জেনেছে, আগে ওই ব্যক্তি জামশেদপুরের একটি কারখানায় সুপারভাইজার হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশের দাবি, বহু সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি মানসিক ভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত।
পুলিশ ধৃতকে জেরা চালাচ্ছে। ওই ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া রাসায়নিক কী কারণে মজুত করা হয়েছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভিন্ন কোনও রহস্য জড়িয়ে কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এ নিয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘বিষয়টি পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে।ওই প্রৌঢ় মানসিক ভারসাম্যহীন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’