ঘিরে ধরে গুলি করে খুন। — নিজস্ব চিত্র।
ভাটপাড়ায় ব্যবসায়ী খুনে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, হামলাকারীরা নিহত সালামউদ্দিন আনসারি ওরফে মুকুলের পরিচিত। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ব্যক্তিগত আক্রোশে মুকুলকে খুন করা হল না কি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ খুন মুকুল। তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। মাথায় গুলি লাগে মুকুলের। কলকাতায় আনার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জরিনা খাতুন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমি ফর্ম নিতে গিয়েছিলাম। সেই সময় তিনটি ছেলেকে নিয়ে মুকুল নেমেছিল। আমি উপরে উঠেছি। উপর থেকে হঠাৎ আমি গুলির আওয়াজ শুনতে পেলাম। কিন্তু প্রথমে ভেবেছিলাম পাশে জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছে, তাই হয়তো বেলুন ফাটানো হচ্ছে। গুলির আওয়াজ শুনে আমি মুকুলের ভাইকে বলি। মুকুল একা পড়েছিল। ওর ভাই গিয়ে মুকুলকে তোলে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি দোতলায় ছিলাম। তাই কাউকে দেখতে পাইনি।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে ভাটপাড়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাকড় মহল্লায় চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন মুকুল। সেই সময় তাঁর সঙ্গে পরিচিতরাই ছিলেন বলে দাবি মহম্মদ ইরফান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার। মুকুল বাতিল জিনিসপত্রের ব্যবসা করতেন। ইরফানের বক্তব্য, ‘‘মুকুলভাই অন্যান্য দিনের মতো আজ সকালেও গোলায় যাচ্ছিল। আজকে পঙ্কজ ডেকে ওকে বসিয়ে সিগারেট খাওয়াল। তার পর তারিক, সলমান, দীপক, ইমরান মিলে গুলি চালিয়েছে।’’ আরও এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, হামলাকারীরা হেঁটেই এসেছিল।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের মতে মুকুল সমাজবিরোধী ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা যে, এক জন মারা গিয়েছেন। তবে এই লড়াইটা মনে হচ্ছে নিজেদের মধ্যে ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে। আমার কাছে যতটুকু খবর আছে, যারা ওর সঙ্গে থাকে তারাই মেরেছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারাও দুর্নীতি করে। যে ছেলেটি মারা গিয়েছে সে-ও পরিচিত সমাজবিরোধী ছিল। আগে কামারহাটিতে থাকত। ওখানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত। সেই সময় দু’জন মারাও গিয়েছিলেন। আগেও এই ছেলে নানা মামলায় গ্রেফতার হয়েছে। সঠিক কী হয়েছে তার তদন্ত পুলিশ করবে।’’
মুকুলকে কেন খুন করা হল, কারা তাঁকে খুন করল— তা জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।