প্রতীকী চিত্র।
মাতৃভূমি লোকালে অন্য মহিলা যাত্রীদের হাতে হেনস্থা ও নিগৃহীত হলেন এক মহিলা যাত্রী। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে আপ ক্যানিং শিয়ালদহ মাতৃভূমি লোকালে। ঘটনায় আজিমা মোল্লা নামে ওই মহিলা যাত্রী গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যানিং জিআরপি অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত ওই মহিলা।
রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসন্তী থানার খেরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজিমা শুক্রবার সকালে ক্যানিং স্টেশন থেকে আপ ক্যানিং-শিয়ালদহ মাতৃভূমি লোকাল ট্রেন ধরেছিলেন। তাঁর ভাই গিয়াসউদ্দিন মোল্লা কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতেই যাচ্ছিলেন আজিমা। পার্ক সার্কাস স্টেশনে নামার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তালদি থেকে কয়েকজন মহিলা যাত্রী ট্রেনের ওই কামরাতে উঠেই আজিমাকে সিট ছেড়ে দিতে বলেন। তাঁরা দাবি করেন, প্রতিদিন ওই নির্দিষ্ট জায়গাতে বসেই তাঁরা যাতায়াত করেন। কিন্তু আজিমা সিট ছাড়তে রাজি না হওয়ায় তা নিয়ে প্রথমে বচসা শুরু হয়। দু’পক্ষের মধ্যে বেশ খানিকক্ষণ বচসা চলতে থাকে। ট্রেনটি বেতবেরিয়া স্টেশনে ঢুকলে আরও কয়েকজন মহিলা যাত্রী ওই কামরায় ওঠেন।
তাঁরাও আজিমাকে সিট ছাড়তে বলেন। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর শুরু করেন সাত আটজন মহিলা যাত্রী মিলে। অভিযোগ, মোবাইল ফোন, টাকা পয়সা এমনকী গয়নাও ছিনিয়ে নেন ওই মহিলারা। আজিমাকে মারধর করে বেতবেরিয়া স্টেশনে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় কোনও রকমে ক্যানিংয়ে ফেরেন আজিমা। এই ঘটনার পর থেকেই যথেষ্ট আতঙ্কিত তিনি। আজিমা বলেন, “মহিলা কামরাতেও কোনও নিরাপত্তা নেই। আজ কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি। মাতৃভূমি লোকালে আর যাতায়াত করব না।’’
দীর্ঘদিন ধরেই শিয়ালদহ-দক্ষিণ শাখার ক্যানিং লাইন-সহ অন্য লাইনে এই ধরনের নিত্যযাত্রীদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। মাঝে রেল পুলিশের নজরদারির ফলে তা কিছুটা কমলেও আবারও যে সেই দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে তা এ দিনের ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। পাশাপাশি এই ঘটনায় মাতৃভূমি লোকালে সাধারণ মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠল।
এ বিষয়ে সোনারপুর জিআরপির এক পুলিশকর্মী বলেন, “এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে। যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে নজরদারি
চালানো হবে।’’