কী কী রয়েছে সেই তালিকায়। প্রতীকী ছবি। সৌজন্যে: টু হার্টজ
শুধু যে বিয়ের দিনটাই আচার অনুষ্ঠানে ঠাসা, তা কিন্তু নয়। বাঙালি বিয়ের আগেও রয়েছে একাধিক রীতি-রেওয়াজ। এই প্রতিবেদনে রইল সেই তালিকা।
পাকা দেখা: বিয়ের প্রথম ধাপ পাকা দেখা। বর ও কনে পক্ষ মুখোমুখি আলোচনায় বসেন। বিয়ের তারিখ ও অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা সম্পর্কে কথাবার্তা হয়। অনেক ক্ষেত্রে বরের মা সোনার হার বা অন্য কোনও গয়না দিয়ে আশীর্বাদ করেন হবু পুত্রবধূকে।
আইবুড়োভাত: বিয়ে পাকা হয়ে গেলে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা হবু বর বা হবু কনেকে ডেকে খাওয়ান। তবে বর বা কনের বাড়িতে বিয়ের আগের দিন আইবুড়োভাত হয়। ভাত, নানা রকমের ভাজা, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, মাছের বিভিন্ন পদ, মাংস, চাটনি ইত্যাদি নানা রকমের পদের সমাহার। প্রথম গ্রাস কনে বা বরকে খাইয়ে দেন তাদের মা। পরে অন্যান্য সদস্যরা খাইয়ে দেন।
শাঁখা-পলা পরা: লাল সাদা চুড়ির এই জুটি এয়োস্ত্রী-র প্রতীক। বিয়ের আগের দিন হবু কনের মা বা বাড়ির বড়রা কনেকে নিয়ে মন্দিরে যান। তার পর কনেকে শাঁখা-পলা পরানো হয়। অনেক বাড়িতে বিয়ের আগের দিন মন্দিরে গিয়ে দেবতাকে নিমন্ত্রণপত্র দিয়ে আমন্ত্রণ জানানোর রীতি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তারপর কনেকে শাঁখা-পলা পরানো হয়। জল সইতে যাওয়া: বিয়ের দিন বেলার দিকে কনের বাড়ি থেকে জল সইতে যাওয়া হয়। বাড়ির আশেপাশে কোনও পুকুর বা নদী থেকে তামার ঘড়ায় জল এনে রাখা হয়। কোথাও কোথাও ভোরবেলা এই রীতি পালন করা হয় এবং গায়ে হলুদের পর সেই জল দিয়ে বর-কনে স্নান করে থাকেন। দধি মঙ্গল: ভোরবেলা উঠে হবু কনে ও বরকে দই, চিঁড়ে, কলা ও সন্দেশ মেখে খেতে দেওয়া হয়। এবং বেশ অনেকটা পরিমাণে দেওয়া হয়। কারণ, তার পর সারা দিন উপোস করে থাকতে হয়।
বৃদ্ধি পুজো: বর ও কনের বাড়িতে আলাদা ভাবে এই পুজো হয়। হবু কনে ও বরের জন্য আশীর্বাদ চাওয়া হয় স্বর্গত পূর্বপুরুষের কাছে। বাবা বা পিতৃস্থানীয় কেউ অর্থাৎ কাকা, জ্যাঠা, মামা এই পুজো করে থাকেন বর বা কনের সাত পুরুষের উদ্দেশ্যে।
গায়ে হলুদ ও তত্ত্ব: কাঁচা হলুদ শিলে বেটে তাতে সরষের তেল দিয়ে মাখা হয়। প্রথমে বরকে এই হলুদ মাখানো হয়। তার পর বরের ছোঁয়ানো হলুদ রুপোর বাটিতে করে কনের বাড়িতে পাঠানো হয়। এই হলুদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় কনের গায়ে হলুদের শাড়ি, সিঁদুর লাগানো গোটা রুই মাছ এবং অন্যান্য উপহার। একেই বলা হয় তত্ত্ব। অন্য দিকে, বৌভাতের দিন কনের বাড়ির থেকে উপহার নিয়ে যাওয়া হয় বরের বাড়ির জন্য। তাকে বলা হয় ফুলসজ্জার তত্ত্ব।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।