বয়স হয়েছে, তা-ও একা ঘুরতে যেতে চান? ছবি- সংগৃহীত
কর্মজীবনে টানা ৩০টি বছর পার করে, অবসর নিয়েছেন প্রদীপবাবু। ঠিক করেছেন, সঞ্চয়ে যতটুকু যা আছে তা দিয়ে এই বার জীবনটা শুধু আরব বেদুইন হয়ে ঘুরে ঘুরেই কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু শরীরের কথা ভেবে বাড়ির লোক কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শারীরিক তেমন সমস্যা যদি না থাকে, বয়স ৬০ পার করলেও একা বা দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়া যেতেই পারে। এতে শরীর এবং মন তরতাজা থাকবে। আবার এখন অনেক জায়গাতেই বয়স্কদের নিয়ে দল করে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়। তেমন দলেও যোগ দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সুবিধা হল সন্তানের সঙ্গে বয়সের ফারাক থাকায় অনেক বিষয়েই তাঁদের মতের মিল হয় না। কিন্তু এক বয়সি বা এক মানসিকতার মানুষজনের সঙ্গে ঘুরতে গেলে ওই পরিসরে মানিয়ে নিতে সুবিধা হয়। তাই শারীরিক খুব সমস্যা না থাকলে এক-দু’বার বাড়ির বয়স্কদের নিজেদের মতো করে ঘুরতে যেতে দেওয়া উচিত। চিকিৎসকদের মতে, এর ফলে শারীরিক এবং মানসিক অনেক সমস্যাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
অবসর নেওয়ার পর নিজেদের মতো করে কেন ঘুরতে যেতে দেবেন অভিভাবকদের?
১) দীর্ঘ দিন এক রুটিনে থাকার পর হঠাৎই অবসর অবসাদ ডেকে আনতে পারে। তা কাটাতে ঘুরতে যাওয়া ভাল।
২) ঘুরতে গেলে মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়। মন ভাল থাকলে শরীরও ভাল থাকে।
৩) জীবনের অর্ধেকটা পথ পেরিয়ে আসার পর নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করার আনন্দই আলাদা।
৪) একটি বয়সের পর একা বাইরে বেরোতে গেলেও কারও উপর নির্ভর করতে হয়। এতে বয়স্কদের আত্মবিশ্বাসের অভাব ঘটতে পারে, হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারেন তাঁরা। তাই মাঝেমধ্যে ঘুরতে যাওয়ার পক্ষেই মত দেন মনোবিদরাও।
জীবনের এই দ্বিতীয় অধ্যায়কে উপভোগ করুন
দেশে-বিদেশে এমন অনেক সংস্থা আছে, যারা এই বয়সের পর্যটকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে তাঁদের ঘুরতে নিয়ে যান। ঘুরতে যাওয়া অনেকের কাছেই ওষুধের মতো কাজ করে। বয়স ৬০ পেরোলেও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হলেই একা অথবা বয়স্কদের দলে ঘুরতে যাওয়া নিরাপদ হতে পারে।
ঘুরতে যাওয়ার আগে কী কী বিষয়ে মাথায় রাখবেন?
যেখানেই ঘুরতে যান না কেন, কিছু ক্ষেত্রে বয়স্কদের বিশেষ ভাবে সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ, এই বয়সে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। তাই চট করে যে কোনও সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ার ভয় উড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রাথমিক ভাবে, কিছু জরুরি ওষুধ বা প্রতিদিন যে সব ওষুধ খেতে হয়, তা সঙ্গে রাখাই ভাল। যদি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে ঘুরতে না যাওয়াই ভাল।
ঘুরতে গিয়ে নায়কোচিত কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। একা বা দলে ঘুরতে গিয়েও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে চলবে না। একেবারে শারীরিক কসরত করার অভ্যাস না থাকলে হঠাৎ এক দিন পাহাড়ে চড়তে গেলে সমস্যা হবেই। তাই নিজের শরীরের অবস্থা বুঝে কোথায় ঘুরতে যাবেন, তা ঠিক করুন।