পাইন এবং রডোডেনড্রনের গহীন অরণ্যে হারিয়ে যেতে পারেন মনের মানুষের হাত ধরে। ছবি- সংগৃহীত
বিয়ের জন্য অনেক ক’টা দিন ছুটি নিয়ে ফেলেছেন। মধুচন্দ্রিমার জন্য আর ছুটি চাওয়া যাবে না। তাই বলে ঘুরতে যাওয়া হবে না? ক্যালেন্ডারে শনি, রবির সঙ্গে কোনও ভাবে যদি আর দু’টি দিন ছুটি ম্যানেজ করে নিতে পারেন, তা হলে আর কথাই নেই। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই আর কোথায় কোথায় যেতে পারেন, তার রুট ম্যাপ দেওয়া হল এখানে।
১) লেপচাজগত
দার্জিলিঙের ভিড় এড়িয়ে দু’জনে পাইন এবং রডোডেনড্রনের গহীন অরণ্যে হারিয়ে যেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন লেপচাজগত থেকে। আবহাওয়া ভাল থাকলে কাঞ্চনজঙ্ঘার পাঁচটি শৃঙ্গই দেখা যায় লেপচাজগত থেকে। দার্জিলিং চায়ে চুমুক দিয়ে, তারা ভরা আকাশের নীচে, আগুন পোহানোর মজাই আলাদা। লেপচাজগতে থাকারও অনেক জায়গা রয়েছে। তবে এই সময়ে আগে থেকে বুকিং না করলে জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়।
কী ভাবে যাবেন?
দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লেপচা জগত। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছে গাড়িতে লেপচা জগত পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা মতো।
মুরুগুমা ড্যামের দৃশ্য। ছবি- সংগৃহীত
২) মুরুগুমা
অযোধ্যা পাহাড় ছাড়াও পুরুলিয়ার অন্যতম আকর্ষণ হল মুরুগুমা ড্যাম। এই ড্যামের গা ঘেঁষেই রয়েছে ইকো ফ্রেন্ডলি কটেজ। এই শীতে পাহাড় ঘেরা ড্যাম আর মিঠে রোদ গায়ে মেখে আদিবাসী গ্রামে ঘোরাঘুরি, রাতে মাদলের তালে আদিবাসী নাচ, মধুচন্দ্রিমার ক’টা দিন ভরিয়ে তুলবে।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে আগের দিন রাতে ট্রেনে উঠলে পরের দিন ভোর ভোর নেমে পড়া যায় পুরুলিয়া। সেখান থেকে গাড়িতে মুরুগুমা আসতে পারেন। সময় লাগবে এক ঘণ্টা মতো। হোটেলে বলে রাখলে তারাই ব্যবস্থা করে রাখেন। অথবা নিজেদের গাড়িতেও যেতে পারেন।
নদীর ধারে এমন একটি সুন্দর জায়গায় প্রিয়জনের হাত ধরে বসে থাকতেই ভাল লাগবে। ছবি- সংগৃহীত
৩) রায়চক
দু’জনে নিভৃতে সময় কাটাতে চাইলে দু’দিনের জন্য ঘুরে আসতেই পারেন রায়চক থেকে। হলদিয়া এবং কলকাতার মধ্যবর্তী অঞ্চল যেখান দিয়ে গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছে। নদীর ধারে এমন একটি সুন্দর জায়গায় প্রিয়জনের হাত ধরে বসে থাকতেই ভাল লাগবে। চাইলে কাছাকাছি ঘুরে আসতে পারেন রায়চক ফোর্ট, ডায়মন্ড হার্বার লাইট হাউস, চিংড়িখালি ফোর্ট এবং জয়নগর থেকেও।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে রায়চকের দূরত্ব ৫৪ কিলোমিটার। বেশি দূর নয়। চাইলে এক দিনেই গিয়ে ফিরে আসা যায়। গাড়ি নিয়ে যেতে ঘণ্টা দুয়েকের বেশি লাগার কথা নয়। এ ছাড়া এসপ্ল্যানেড থেকে সরকারি-বেসরকারি বাসও ছাড়ে। কিন্তু যদি মনের মানুষকে নিয়ে একটা রাত কাটাতে চান, তা হলে বিভিন্ন দামের মধ্যে রয়েছে থাকার ব্যবস্থা।
অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন? আপনাদের জন্য আদর্শ জায়গা চিলাপাতা। ছবি- সংগৃহীত
৪) চিলাপাতা
ডুয়ার্সের অন্যান্য জঙ্গলগুলির মধ্যে চিলাপাতা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। যে সব দম্পতি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা হল চিলাপাতার জঙ্গল। একটু আগে থেকে পরিকল্পনা করলে জঙ্গলের মধ্যেই সরকারি লজ বুক করতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেনে পৌঁছে যান মালবাজার। সেখান থেকে ভাড়া গাড়িতে মালবাজার।
৫) তাজপুর
দিঘা, মন্দারমণির ভিড় এড়াতে চাইলে নতুন যুগলদের পছন্দের জায়গা হল নির্জন তাজপুর। দিঘার খুব কাছেই অবস্থিত তাজপুর। কিছু দিন আগে পর্যন্ত এখানে থাকার ব্যবস্থা ছিল না। দিঘা কিংবা শঙ্করপুর থেকে ঘুরে, আবার ফিরে যেতে হত। কিন্তু পর্যটকদের চাহিদা বুঝে এখন তাজপুরেও থাকার জন্য ছোট বড় নানা রকম হোটেল গড়ে উঠেছে।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেনে দিঘা পৌঁছতে পারেন। সেখান থেকে গাড়িতে তাজপুর যেতে বেশি ক্ষণ সময় লাগে না। নিজেদের গাড়িতে গেলে বম্বে রোড হয়ে টানা তাজপুর পৌঁছতে সময় লাগে ছ’ঘণ্টার মতো।